Header Ads

Header ADS

শবে মেরাজের ঘটনা। মেরাজ রাতের আমল। শবে মেরাজের নামাজের নিয়ম

 


শবে মেরাজের ঘটনা মেরাজ রাতের আমল

নবীজির মেরাজ কত বার হয়েছে?

নবীজির মোট মেরাজ হয়েছে ৩৪ বার তার মধ্যে ৩৩ বার হয়েছে স্বপ্ন রুহানিভাবে আর একবার হয়েছে শশরীরে (সুত্র তফসিরে রুহুল বয়ান)

বোরাকে জিবরাইল সামনে বসা কি মর্যাদার হানি হয়েছে?

বোরাকে সামনে বসলেন জিবরাইল পিছনে ইমামুল আম্বিয়া - বসা ছিলেন  এখন প্রশ্ন হতে পারে জিবরাইলের পিছনে নবীজি বসার ফলে মর্যাদার হানি হয়নি? এর জবাবে মুফাসসিরগন বলেন জিবরাইল হলেন ড্রাইভার যেমন ট্রেনের মধ্যে বা প্লেনের মধ্যে পাইলট সামনে থাকে যাত্রি পিছনে থাকে আর যাত্রি যদি একজন প্রেসিডেন্টও হয় তাতে যেমন মর্যাদার হানি হয়না তেমনি নবীজি জিবরাইলের পিছনে বসাতে মর্যাদার হানি হয়নি

মেরাজে নবীজির মোট ১২ রাকাত নামাজ

নবীজি (সা.) যখন বোরাকে আরোহণ করে যাচ্ছিলেন পথিমধ্যে অসংখ্য খেজুর বৃক্ষ চোখে পড়ল। তখন জিবরাইল (আ.) বললেন, এখানে অবতরণপূর্বক দুই রাকাত নামাজ আদায় করুন। সঙ্গে সঙ্গে নবীজি দুই রাকাত নামাজ পড়ে নিলেন। জিবরাইল (আ.) বললেন, আপনি কি জানেন কোন স্থান নামাজ পড়েছেন? নবীজি বললেন, না। জিবরাইল বললেন, মদিনায় নামাজ পড়লেন, যেখানে আপনি হিজরত করবেন। অতপর পুনরায় যাত্রা শুরু করলেন। অপর এক স্থানে এসে জিবরাইল (আ.) আবার অবতরণপূর্বক নামাজ আদায় করতে বললেন। তখনই নবীজি নেমে নামাজ আদায় করলেন। জিবরাইল বললেন, এ জায়গার নাম সিনা উপত্যকা। এখানে ছিল একটি বৃক্ষ। এর নিকট মুসা (আ.) আল্লাহর সঙ্গে কথা বলছিলেন। আপনি সেই বৃক্ষের কাছেই নামাজ আদায় করলেন। আবার আরেকটি জায়গা অতিক্রমকালে জিবরাইল (আ.) নবীজিকে নামাজ আদায় করতে বললে, সেখানে নেমে নামাজ পড়ে নিলেন। জিবরাইল বললেন, আপনি মাদায়ানে নামাজ পড়লেন। এ জায়গায় ছিল শোয়াইব (আ.)-এর বাসস্থান। আবার যাত্রা শুরু করলেন। আরেক স্থানে পৌঁছে জিবরাইল (আ.) পুনরায় নামাজ পড়তে বললেন। তখনই নবীজি নামাজ আদায় করে নিলেন। জিবরাইল বললেন, এটা বায়তুল লাহাম, যেখানে ঈসা (আ.) জন্মগ্রহণ করেছিলেন।


নবীজি (সা.) ও জিবরাইল (আ.) মসজিদে হারাম থেকে দীর্ঘ ভ্রমণ শেষে বায়তুল মুকাদ্দাসে পৌঁছেন। অবশেষে নবী করিম (সা.) বায়তুল মুকাদ্দাসে পৌঁছে বোরাক থেকে নামলেন। অতঃপর তিনি বায়তুল মুকাদ্দাসে প্রবেশ করে দুই রাকাত তাহিয়্যাতুল মসজিদের নামাজ পড়লেন। নবী করিম (সা.)-এর শুভাগমন উপলক্ষে অন্য নবীগণ সেখানে প্রতীক্ষিত ছিলেন। তন্মধ্যে ইবরাহিম (আ.), মুসা (আ.) ও ঈসা (আ.)ও উপস্থিত ছিলেন।
মুয়াজ্জিন আজান শেষে ইকামত দিতে লাগলেন। তখনই জিবরাইল (আ.) নবী করিমকে (সা.) হাতে ধরে সামনে ঠেলে দিলেন। নবীজি সেই জামাতের ইমামতি করলেন। নামাজ শেষে জিবরাইল নবীজিকে লক্ষ্য করে বললেন, আপনার ইমামতিতে কারা নামাজ পড়েছেন? নবীজি বললেন, আমি জানি না। জিবরাইল বললেন, প্রেরিত সমুদয় আম্বিয়াগণ এবং সপ্ত আকাশের সম্মানিত ফেরেশতাগণ আপনার পেছনে নামাজ আদায় করেছেন। আর এভাবেই সমস্ত নবীগণের ওপর শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদা অর্জন করলেন শেষ নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)। (খাসায়েসুল কুবরা : ১/১৫৩; জুরকানি : ৬/৫; সিরাতে মুস্তফা : ১/২৯০)

এর পর শুরু হল উদ্ধ জগতের ভ্রমণ।

উদ্ধজগতে ভ্রমণ আসমান এর দুরত্ব

তফসিরের কিতাবে আছে দুনিয়া থেকে প্রথম আসমানের দুরুত্ব হল ৫০০ বছরের রাস্তা, আর ১ম আসমানের দুরত্ব হল ৫০০ বছরের রাস্তা, আর সেখানে থেকে ২য় আসমান ৫০০ বছরের রাস্তা, এভাবে এক আসমান থেকে অপর আসমানের দুরুত্ব হল ১০০০ বছরের রাস্তা অর্থ্যাৎ মোট ৭০০০ বছরের রাস্তা মহানবী () মুহুতে অতিক্রম করে আরশে আজিমে পৌঁছে গেলেন সুবহানাল্লাহ

দুনিয়ার আকাশের ভ্রমন করেই বিজ্ঞানিরা বলছেন মহাকাশ জয়, অথচ আমাদের নবীকে আল্লাহ তায়ালা দুনিয়ার আকাশ থেকে ৭০০০ বছরের রাস্তা পার করে আরো উধে ভ্রমণ করালেন যা কেয়ামত পযন্ত পৃথিবীর বিজ্ঞিানিদের দ্বারা সম্ভবপর নয় এর দ্বারা মুলত আল্লাহ তায়ালা কেয়ামত পযন্ত আমার নবীকে এমন মুজেজা দিয়েছেন যা কেয়ামত পযন্ত মাখলুকের জন্য মুজেজা হিসেবে থেকে যাবে

সুবহান আল্লাহর ক্ষমতা- আল্লাহ কিসের থেকে পাক?

এখন প্রশ্ন হতে পারে এটা  কিভাবে সম্ভব? এর জবাব আল্লাহ সুবহান দিয়ে  দিয়েছেন - আল্লাহ তায়ালা হলে পাক কিসের থেকে পাক? আল্লাহ হলেন সব ধরনের অপারগতা দুবলতা অক্ষমতা থেকে পাক আল্লাহর কাছে অসম্ভব বলতে কিছু নাই সুতরাং আল্লাহ নিজেই তার হাবিবকে নিয়ে গেছেন উদ্ধজগতে অতএব এতে আর কারো কোন প্রশ্ন থাকতে পারেনা, যদি কেহ প্রশ্ন করে তাহলে সে মুলত আল্লাহর ক্ষমতার উপর প্রশ্ন তুলল

মেরাজ আত্তাহিয়্যাত

মেরাজে যখন নবীজি গেলেন একান্ত সাক্ষাতে নবীজি আল্লাহর জন্য ৩টি উপহার নিয়ে গেলেন তা হল মৌখিক এবাদত, শারিরিক এবাদত মালি এবাদত  সেজন্য নবীজি বললেন

আত্তাহিয়্যাতু লিল্লাহি ওয়াসসালাওয়াতু ওয়াত্তয়্যিবাত

অতপর আল্লাহ তায়ালা রাসুল (সা.) কে তিনটি জিনিষ দিলেন এভাবে- 

আসসালামু আলাইকা আইয়্যুহান নাবিয়্যু ওয়ারাহমাতুল্লহি ওয়াবারাকাতুহু

হে নবী! আপনার প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক, আল্লাহর রহমত ও বরকত বর্ষিত হোক। 

উম্মতের কান্ডারী নবী (সাঃ) এমন মিলন মুহুর্তেও তার উম্মতকে ভুলেন নাই। আল্লাহর অনুগ্রহ তার উম্মতের জন্যও চেয়ে নিলেন এভাবে-

আসসালামু আলাইনা ওয়া আলা-

 ইবাদিল্লাহিস সলিহীন

আমাদের প্রতি এবং আল্লাহর সকল নেক বান্দাহদের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক।

আল্লাহ এবং তার রাসুল (সাঃ) এর এমন মধুর আলোচনা শুনে আরশবাহী- সকল ফেরেশাতাগণ সমস্বরে একত্রে বলে উঠলেন-

আশহাদু আল লা- ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মোহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহু

আমি সাক্ষ্য দিতেছি যে, আল্লাহ ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই। আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি মোহাম্মাদ (সাঃ) আল্লাহর বান্দাহ এবং রাসুল।

মুলত আল্লাহ নবীর মাঝে মেরাজের রাতে সবপ্রথম যে কথোপকথন হয়েছে তাই আমরা নোমাজের আত্তাহিয়্যাতে পাঠ করি

সুরা ফাতেহা দিয়েও আল্লাহর সাথে কথোপকথন

সাহাবি হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা সূরা ফাতিহা পড়। কোনো বান্দা যখন বলে,

আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামীন, তখন আল্লাহ বলেন, আমার বান্দা আমার প্রশংসা করেছে। যখন বলে,

আর রাহমানির রাহিম, তখন আল্লাহ বলেন, আমার বান্দা আমার গুণ বর্ণনা করেছে। বান্দা যখন বলে,

মালিকি ইয়াউমিদ্দীন। আল্লাহ বলেন, আমার বান্দা আমার মর্যাদা বর্ণনা করেছেন। বান্দা যখন বলে,

ইয়্যাকানাবুদু ওয়া ইয়্যাকানাস্তাইন, আল্লাহ বলেন, এ হচ্ছে আমার ও আমার বান্দার মাঝের কথা। বান্দা যখন বলে,

ইহদিনাস সিরাতাল মুস্তাকিম... (শেষ পর্যন্ত)। আল্লাহ বলেন, এসব হচ্ছে আমার বান্দার জন্য। আমার বান্দার জন্য তাই রয়েছে, যা সে চায়। -সহিহ মুসলিম শরিফ: ৩৯৫

সে জন্য উলামায়ে কেরাম বলেন নামাজ হল মুমিনের জন্য মেরাজ।

নামাজ বেহেস্তের চাবি সে চাবি আমরা কি নিতে চাই?

নবীজি মেরাজ থেকে আমাদের জন্য ৫ বেলার নামাজ নিয়ে এসেছেন এটার দ্বারা আমরা গুনাহগার উম্মতেরা জমিনে দাঁড়িয়ে মহান আরশের মালিক আল্লাহর সাথে দৈনিক ৫ বার কথা বলতে পারি, কিন্তু যে ব্যক্তি ৫ বেলার নামাজ পড়তে চাইনা সে মুলত নামাজ যে বেহেস্তের চাবি সে চাবি গ্রহণ করতে চায়না, যদি আমরা নামাজ পড়ি তবেই আমরা সে চাবি সংগ্রহ করতে পারব না হয় চাবি ছাড়া বেহেস্তের দরজা কিভাবে খুলবে?

#সাহাবী জান্নাতেও নামাজের সুযোগ দেয়ার জন্য দোয়া করত

বেনামাজির সাথে লেনদেন

বুযুগানে দ্বিন বলেন বেনামাজিকে মেয়ে দিবেন না, বেনামাজির মেয়েকে বিয়ে করবেন না, বেনামাজির দোকান থেকে কোন কিছু কিনবেন না, বেনামাজির ঘরে দাওয়াত খাবেন না, যে নামাজ পড়েনা তাকে বিশ্বাস করতে নিষেধ করা হয়েছে, কারন যে আল্লাহর সাথে বেওয়াফাই করতে পারে সে আপনার আমার সাথেও বেওয়াফাই করতে পারবে

এই মেরাজ করে প্রিয় নবী মানসিক শান্তি অনুভব করেছেন  তাই যখন যে নামাজের মাধ্যমে মহান রবের সাথে উম্মত কথা বলা সুযোগ পাবে সেটা চিন্তা করে তিনি ৫০ ওয়াক্ত নামাজই নিয়ে নিলেন, কিন্তু হযরত মুসা (আ) এর পরামশে তিনি ৯ বার গিয়ে ৪৫ ওয়াক্ত নামাজ কমিয়েছেন, তবে যে বাকী ৫ ওয়াক্ত আছে তাও যদি আমরা পড়ি তাহলে আল্লাহ আমাদেরকে ৫০ ওয়াক্তের ফজিলত দান করবেন।

শবে মেরাজের নামাজ:

আগামী শনিবার রাতে শবে মেরাজ এই রাতে প্রথম কাজ হল

#এশারের নামাজ অবশ্যই জামায়াতে পড়বেন

#তারপর ১২ রাকাত নামাজ পড়বেন

عَنْ أَنَسٍ ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، قَالَ : " فِي رَجَبٍ لَيْلَةٌ يُكْتَبُ لِلْعَامِلِ فِيهَا حَسَنَاتُ مِائَةِ سَنَةٍ ،

রজবে এমন একটি রাত আছে যে রাতে এক রাত এবাদত করলে তার আমলনামায় ১০০ বছরের সাওয়াব লিখে দেয়া হবে।

 وَذَلِكَ لِثَلاثٍ بَقِينَ مِنْ رَجَبٍ ،

আর সে রাতটি হল রজব মাস বাকী থাকার ৩ দিন বাকী থাকা অবস্থায়। অর্থ্যাৎ ২৭ তারিখের রাত।

 فَمَنْ صَلَّى فِيهَا اثْنَتَيْ عَشْرَةَ رَكْعَةً يَقْرَأُ فِي كُلِّ رَكْعَةٍ فَاتِحَةَ الْكِتَابِ وَسُورَةً مِنَ الْقُرْآنِ ،

আর সে রাতে যারা ১২ রাকাত নফল নামাজ পড়বে প্রতি রাকআতে সূরা ফাতিহার সাথে অন্য যেকোন সূরা পড়বে।

 يَتَشَهَّدُ فِي كُلِّ رَكْعَتَيْنِ وَيُسَلِّمُ فِي آخِرِهِنَّ ،

প্রতি রাকাত অন্তর অন্তর তাশাহুদ পড়বে এবং ১২ রাকাত পর সালাম ফিরাবে

 ثُمَّ يَقُولُ : سُبْحَانَ اللَّهِ ، وَالْحَمْدُ لِلَّهِ ، وَلا إِلَهَ إِلا اللَّهُ ، وَاللَّهُ أَكْبَرُ ، مِائَةَ مَرَّةٍ ،

তারপর এই তাসবিহ ১০০ বার পড়বে: সুবহানাল্লাহি ওয়াল হামদুলিল্লাহি ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার।

 وَيَسْتَغْفِرُ اللَّهَ مِائَةَ مَرَّةٍ

১০০ বার যেকোন ইস্তেগফার পড়বে: আস্তাগফিরুল্লাহা রাব্বি মিন কুল্লি জাম্বিওঁ ওয়া আতুবু ইলাইহি; লা হাওলা ওয়া লা কুওয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহিল আলিয়্যিল আজিম।

 ، وَيُصَلِّي عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِائَةَ مَرَّةٍ ،

১০০ বার যেকোন দরুদ শরীফ পড়বে: আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা সাইয়্যিদিনা মুহাম্মাদিম মাদানিল জুদি ওয়াল কারামি মাম্বাইল ইলমি ওয়াল হিলমি ওয়াল হিকামি ওয়া আলা আলিহী ওয়া আসহাবিহী ওয়া বারিক ওয়া সাল্লিম।

 وَيَدْعُو لِنَفْسِهِ مَا شَاءَ مِنْ أَمْرِ دُنْيَاهُ ، وَآخِرَتِهِ ، وَيُصْبِحُ صَائِمًا ، فَإِنَّ اللَّهُ يَسْتَجِيبُ دُعَاءَهُ كُلَّهُ إِلا أَنْ يَدْعُوَ فِي مَعْصِيَةٍ

এরপর পরম দয়ালু ও ক্ষমাশীল আল্লাহ পাকের নিকট দুনিয়া ও আখিরাতের যেকোন কল্যাণকর দো'আ করবে এবং দিনে রোযা রাখবেইনশা'আল্লাহ সে বান্দার সকল দোয়াসমুহ কবুল করে নিবেন।

(উৎস: কানযুল উম্মাল, খন্ড-১২, পৃষ্ঠা: ৩১২-৩১৩, হাদিস: ৩৫১৭০, এহইয়া উলুমুদ্দীন, বায়হাকী শরীফ, খন্ড-৩, পৃষ্ঠা: ৩৭৪, মাসাবাতা বিসুন্নাহ, পৃষ্ঠা: ৭০)

২য় হাদিস

হযরত সালমান ফারসী রাদ্বিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু হতে বর্ণিত, নবী করিম সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, রজব মাসের মধ্যে এমন এক দিন ও রাত আছে, যা বড় মর্যদাবান। যেই ব্যক্তি ঐ দিনে রোজা এবং রাতে ইবাদত করবে, আল্লাহ পাক তার আমলনামায় ১০০ বছর লাগাতার রোযা রাখা এবং ১০০ বছর রাত জেগে নামায পড়ার সওয়াব দান করবেন। আর ঐ সময়টি হল, রজব মাসের ২৭ তারিখের (শবে মেরাজের) দিন ও রাত।

(উৎস: দুররুল মনসুর, আল জামেয়ুল কবীর, জামেয়ুল আহাদীস ওয়াল ওরাসিল, শুআবুুল ঈমান, খন্ড-৩, পৃষ্ঠা-৩৭৪, হাদিস:৩৮১১)

আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে আগামী ২৭শে রজব ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ ইংরেজী শনিবার দিবাগত রাতে এবাদত করার এবং পরের দিন রবিবার ১টি রোজা রাখার তৌফিক দান করুন আমিন

 

কারা চেয়ারে বসে নামাজ পড়তে পারবে?

যারা জমিনে বসতে পারেনা, যারা সিজদা করতে পারেনা তারা চেয়ারে বসে নামাজ পড়তে পারবে

 

কারা চেয়ারে বসে নামাজ পড়তে পারবেনা?

যে সমস্ত নারী পুরুষ, রুকু সিজদা করতে সক্ষম, দাঁড়াতে সক্ষম, জমিনে বসতে সক্ষম, জমিনে সিজদা দিতে সক্ষম, সে সব নারী পুরুষ শুধুমাত্র আরামের জন্য চেয়ারে বসে নামাজ পড়লে তার নামাজ হবেনা

কোন নামাজে দাঁড়ানো ফরয?

ফরয, বিতির ফজরের সুন্নত নামাজে দাঁড়ানো ফরয, এখন কেহ কোন ওজর ছাড়া যদি বসে বসে এসব নামাজ পড়ে তাহলে তার নামাজে ফরয তরক হয়েছে বলে নামাজ হবেনা, পুনরায় পড়তে হবে

 

চেয়ারে বসতে গেলে ৪টি বিষয় দেখতে হবে

) যদি আমি লাঠিতে ভর দিয়ে বা দেয়ালে হেলান দিয়েও দাঁড়াতে সক্ষম হই তাহলে লাঠিতে ভর দিয়ে বা দেয়ালে হেলান দিয়ে হলেও দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ব

)২য় অপশন হল যদি কোন ভাবেই দাঁড়াতে না পারি তাহলে জমিনে বসে নামাজ পড়তে সক্ষম হলে জমিনে বসে নামাজ পড়বএবং জমিনে সিজদা দিব, কারন আমি যদি দাঁড়াতে সক্ষম না হই তাহলে আমার জন্য ২য় অপশন হল জমিনে বসে নামাজ পড়া এবং জমিনে সিজদা করা, দাঁড়াতে সক্ষম না হলে তার জন্য জমিনের সিজদা তো মাফ হয়নিসে জন্য যে কোন ভাবেই দাঁড়াতে পারেনা কিন্তু সে যদি জমিনে বসতে পারে তার জন্য উচিত জমিনে বসে নামাজ পড়বে এবং জমিনেই সিজদা করবে

) নং অপশন যদি জমিনে বসে জমিনে সিজদা করতে না পারে  তাহলে জমিন থেকে ইঞ্চি উঁচু কিছু রেখেও যদি সিজদা দিতে সক্ষম হই তাহলে সেভাবে ইঞ্চি উঁচু কিছুতে সিজদা দিয়ে জমিনে বসে বসে নামাজ পড়ব

) যদি জমিনে বসে কোন ভাবেই সিজদা দিতে সক্ষম না হয় তাহলে তার জন্য জমিনে সিজদা মওকুফ হয়ে গেল - এমন লোক শরীয়তে মাজুর বলে গন্য হবেআর যিনি মাজুর তার জন্য সিজদা মওকুফ হওয়ার সাথে সাথে দাঁড়ানোও মওকুফ, এমন ব্যক্তি যদি সব নামাজ চেয়ারে বসে বসে পরে তার নামাজ হয়ে যাবে

যারা চেয়ারে বসে নামাজ পড়েন তাঁদের উচিত আগে একজন মুফতি সাহেব থেকে জেনে নেয়া তাঁর জন্য চেয়ার বসে নামাজ পড়া জায়েজ হবে কিনা, যদি আমাকে শরীয়ত চেয়ারে বসে নামাজ পড়ার অনুমতি না দেয় আর আমি যদি নিজের ইচ্ছেমত যখন তখন চেয়ারে বসে নামাজ পড়ি তাহলে পরে আমাকে পসতাতে হবে

 

কোন ধরনের নারি পুরুষের নামাজ কবুল হয়না?

) যদি নামাজে ফরয তরক করেন তাহলে সে নামাজ কবুল হবেনা

) যদি নামাজে ওয়াজিব তরক করেন পরে সাহু সিজদা না দেয় তাহলে সে নামাজ কবুল হবেনা

) যে সঠিক উপায়ে পবিত্রতা অজন করেনা অজু গোসল ঠিক মত করেনা তার নামাজ কবুল হয়না

) যে মহিলা পুরুষ তার সতর যথাযথভাবে না ঢেকে নামাজ আদায় করে তার নামাজ কবুল হবেনা

) যে মহিলা সুগন্ধি লাগিয়ে মসজিদে গেছে সে মহিলা যতক্ষণ সে সুগদ্ধি ধুয়ে সে সুগদ্ধি দুর করবেনা ততক্ষণ তার নামাজ আদায় হবেনা

মহিলারা কোন খুশবু ব্যবহার করতে পারবেনা?

# মহিলারা এমন খুশবু ব্যবহার করা নিষেধ (মাকরুহে তাহরিমি)যার সুগন্ধ ছড়ায়।

যেহেতু নারীদের খুশবু ব্যবহারের ব্যপারে হাদীস শরীফে নিষেধাজ্ঞা এসেছে তাই একে হারাম বলা যাবেনা বরং বলা হবে মাকরুহে তাহরিমি

যে খুশবু গাইরে মাহরাম এর নাকে পৌঁছে যায়,  এমন খুশবু ব্যবহার করে যদি নারী বাহিরে যায় তাহলে সে খুশবুর কারনে যদি পরপুরুষ খুশবু ব্যবহার কারী নারীর প্রতি আকৃষ্ট হয় এমন খুশবু ব্যবহার নিষেধ

মহিলা কি ঘরে স্বামীর কাছে যখন থাকে তখন সুগন্ধি ব্যবহার করতে পারবে?

যে ঘরে মাহরাম মা বাবা ভাই বোন সন্তান স্বামী থাকে বাহিরের কেহ নাই সে ঘরে নারীরা খুশবু ব্যবহার করতে পারবে।

 

) এমন ইমাম যার প্রতি বেশীরভাগ মুসল্লী ন্যায়সঙ্গত কারনে অসন্তুষ্ট, যদি ইমাম সুদের বিরুদ্দে বলায় সুদখোর ইমামের প্রতি অসন্তুষ্ট হয়, ইমাম যদি জেনার বিরুদ্ধে বলে আর জেনাকারী ইমামের প্রতি অসন্তুষ্ট হয় সেটা ধত্যব্য নয়

) সে স্ত্রী যে সারা রাত কাটালেন কিন্তু তার স্বামী তার উপর অসন্তুষ্ট তাহলে সে স্ত্রীর কোন এবাদত কবুল হবেনা

) যে দুই ভাই নিজেদের মধ্যে ঝগড়া মারামারিতে লিপ্ত তাদের এবাদতও কবুল হবেনা

) যে কপালপোড়া মদীনায় অশান্তি সৃষ্টি করে এবং অশান্তি সৃষ্টিকারীকে জায়গা দেয়

১০) মা বাবার নির্দেশ অমান্যকারী সন্তানের কোন এবাদত কবুল হয়না

১১) যে ব্যক্তি দান করে খোটা দেয়

১২) যে ব্যক্তি ভাগ্য বা তকদিরকে অশ্বিকার করে

১৩) শাসক যিনি আল্লাহর বিধান মোতাবেক তার প্রজাদেরকে পরিচালনা করেননা

১৪) নিজের ভাল মন্দ জানার জন্য রাশিফল বা কোন গনককে হাত দেখালে তার নামাজ ৪০ দিন কবুল হবেনা

১৫) মদ পানকারী

কোনো মুসলিম যদি মদ পান করেন তবে তারও ৪০ দিনের নামাজ কবুল হয় না বলে হাদিসে ঘোষণা করেছেন বিশ্বনবি। হাদিসে এসেছে-
-
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আমার উম্মতের মধ্যে যে ব্যক্তি মদ পান করবে, আল্লাহ ওই ব্যক্তির ৪০ দিনের নামাজ কবুল করবেন না। (নাসাঈ)

১৬) আজান শুনে জামাআতে অবহেলাকারী
যে ব্যক্তি আজান শোনার পর বিনা ওজরে মসজিদে গিয়ে জামাআতে নামাজ আদায় করেনা তার নামাজও কবুল হয় না। হাদিসে এসেছে-
- রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি আজান শোনার পরও মসজিদে জামাআতে এসে নামাজ আদায় করে না। কোনো ওজর না থাকলে ওই ব্যক্তির নামাজও কবুল হয় না।’ (আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ)

১৭)  পরের বাপকে যে নিজের বাপ বলে দাবী করা ব্যক্তির নামাজও কবুল হয় না।’ (বুখারি-মুসলিম)

আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে যা কিছুশুনলাম সে মোতাবেক আমল করার তৌফিক দান করুন আমিন।

#sobemeraj #lailatulmeraj

কোন মন্তব্য নেই

ULTRA_GENERIC থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.