A to Z কোরবানির মাসায়ালা ৬৫টি প্রশ্নোত্তর। কোরবানির সঠিক নিয়ম।
A to Z কোরবানির মাসায়ালা
৬৫টি প্রশ্নোত্তর।
১: কুরবানী না
করে সে টাকা গরীবকে দিলে কেমন হয়?
উ: যাদের উপর
কুরবানী ওয়াজিব তারা কুরবানী করতে হবে, নাহয় ওয়াজিব ত্যাগ করার কারনে
গুনাহগার হবে,
তবে গরীবকে অন্যভাবে সাহায্য করতে হবে।
২: হাস মুরগী
দিয়ে কুরবানী করা যাবে কি
উ: না হাস
মুরগী দিয়ে কুরবানী করা যাবে না
৩: কুরবানীর
দিন হাস মুরগী জবেহ করা যাবে কি
উ: একান্ত
প্রয়োজন হলে জায়েজ,
বিনা কারনে উচিত নয়, জবেহ করতে হলে ফজরের আগে
জবেহ করবে।
৪: কত টাকা
থাকলে কুরবানী করতে হবে
উ: যদি কিছু স্বর্ণ, কিছু নগদ
টাকা, কিছু
ব্যবসার মাল থাকে তাহলে সবকিছুর মুল্য যদি ৫২.৫ তোলার
রুপার সমান হয় তাহলে কুরবানী ওয়াজিব, সে হিসেবে বর্তমান বাজার দরে ৫২.৫ তোলার
রুপার দাম প্রায় ৮০/৯০ হাজার টাকা। অতএব আপনার কাছে যদি ৮০/৯০ হাজার টাকার
সমপরিমাণ সম্পদ থাকে তাহলে কুরবানী ওয়াজিব হবে।
৫। কুরবানীর
পশু ক্রয় করার পর তার দুধ খাওয়া যাবে কি
উ: কুরবানীর
জন্য পশু ক্রয় করলে তার দুধ পান করা যাবে তবে যতটুকু দুধ পান করবেন ততটুকুর দাম
সদকা করে দিতে হবে।
৬।কুরবানীর
পশুকে বিরক্ত করা মারা কি জায়েজ
উ: কুরবানীর
পশুকে বিরক্ত করা মারা জায়েজ না
৭। পশুর
উপর বাচ্চাকে চড়ানো যাবে কি
উ: কুরবানীর
পশুর উপর সওয়ার হওয়া জায়েজ নাই
৮। কুরবানীর
পশুর ছবি ফেইসবুকে দেয়া কেমন
উ: কুরবানী হয়
আল্লাহর জন্য যদি তাতে লোক দেখানোর নিয়ত থাকেতাহলে কুরবানী কবুল হবে না, তাই
ফেইসবুকে ছবি দেয়াটা লোক দেখানোর শামিল তাই কুরবানীর পশুর ছবি ফেইসবুকে দেয়া উচিত
নয়।
৯। খোড়া
পশু দিয়ে কি কুরবানী করা যাবে
উ: পশু যদি
এমন খোড়া হয় যে জবেহের স্থান পর্যন্ত হেটে যেতে পারে না তা দিয়ে কুরবানী করা যাবে
না।
১০। পশু
কিনার পর যদি ত্রুটি দেখা যায় তখন কি করবে?
উ: পশু কিনার
পর এমন ত্রুটি দেখা দিল যে তা দ্বারা কুরবানী করা জায়েজ হবে না তখন কুরবানী কারী
যদি ধনী হয় তাহলে অন্য একটি পশু কিনে এনে তা দিয়ে কুরবানী করবে।
১১। পশু
জবেহের সময় ৩টি শর্ত কি?
উ: (১) জবাইকারী
ব্যক্তি মুসলমান হতে হবে। (২) জবাই করার
সময় আল্লাহর নাম উচ্চারণ করতে হবে। (৩) পশুর
খাদ্যনালী, শ্বাসনালী
ও গলায় অবস্থিত অন্যান্য রগ ভালভাবে কাটতে হবে
১২। জবেহ
কি মসজিদের ইমাম এর হাতে করাতে হবে নাকি নিজে করতে হবে?
উ: কুরবানীর
পশু নিজের হাতে কুরবানী করা উত্তম, যদি নিজে করতে অক্ষম হন তখন অন্য
কারো দ্বারা করানো জায়েজ, তবে সেখানে উপস্থিত থাকা উচিত।
১৩। পশু
শোয়ানোর পর কি ছুরি ধার করা যাবে
উ: যাবে না
কারন- এক
সাহাবী পশু শোয়ানোর পর ছুরি ধার দিচ্ছেলেন। হুজুর (সা.) দেখলেন এবং
বললেন, তুমি
প্রাণীটিকে একাধিকবার মৃত্যু দিতে চাচ্ছো।
১৪। জবেহ
করার আগে কি পশুকে খাওয়ানো যাবে
উ: জবাই করার পূর্বে পশুকে ঘাস, পানি ইত্যাদি ভালভাবে খাওয়াতে
হবে। কোরবানীর প্রাণীকে
ক্ষুধার্থ বা পিপাসার্ত রাখা অন্যায়।
১৫। জবেহের
সময় পশু কিভাবে শোয়াতে হবে
উ: জবাই করার জন্য পশুকে শোয়াতে হবে সহজ সুন্দরভাবে। কঠোরভাবে
নয়। কেবলার দিকে
ফিরিয়ে শোয়াতে হবে, বাম পার্শ্বের উপর। পশুর চার পায়ের মধ্যে তিনটি বাঁধবে। আগে থেকেই ছুরি ধারা দিয়ে রাখবে। ভোঁতা
ছুরি দিয়ে জবাই করবে না। ছুরি যদি ধারাতে হয় তাহলে পশুর সামনে
ধারাবে না। আড়ালে
ধারাবে। কোরবানীর পশু
শোয়ানোর পর ছুরি ধারানো অন্যায়। বরং
আগে থেকেই ধার দিয়ে নিবে
১৬। পশু
কিভাবে জবেহ করতে হবে
গলায় জবাই করতে
হবে। এমনভাবে জবাই করা যাবে না যাতে গলা পুরাপুরি আলাদা
হযে যায়। জবাই
করার সময় ‘বিসমিল্লাহ আল্লাহু আকবার' বলতে হবে। যাতে দ্রুত জবাই হয়ে যায় এবং পশুর
কষ্ট কম হয় সেদিকে খেয়াল রাখবে। একটি পশুকে আরেকটি পশুর সামনে জবাই
না করা ভাল।
১৭। পশুর
চামড়া কখন খসানো শুরু করতে হবে?
উঃ পশুর প্রাণ
বের হওয়ার পূর্বে চামড়া খসানোর কাজ শুরু করবে না।
১৮। জবেহ
করার আগে কি দোয়া পড়তে হয়?
উ: (১) কোরবানীর পশু কেবলার দিকে ফিরিয়ে শোয়ানোর পর এই আয়াত
পড়বে : ‘ইন্নি ওয়াজ জাহতু ওয়াজ হিয়া লিল্লাযি ফাতারাছ ছামাওয়াতি
ওয়াল আরদা হানিফাও ওয়ামা মিনাল মুশরিকীন। ইন্না
সালাতি ওয়া নুসুকি ওয়া মাহ ইয়ায়া ওয়া মামাতী লিল্লাহি রাবিবল আলামিন। লা
শারীকা লাহু ওয়া বিজালিকা উমিরতু ওয়া আনা মিনাল মুসলিমিন'।
অর্থ নিশ্চয়
আমি দৃঢ়ভাবে সেই মহান সত্তার অভিমুখী হলাম, যিনি আসমান ও
জমিন সৃষ্টি করেছেন। আমি মুশরিকদের অন্তর্গত নই। নিশ্চয় আমার নামায, আমার কোরবানী, আমার জীবন, আমার
মরণ সবই বিশ্ব প্রতিপালক মহান আল্লাহর জন্যে নিবেদিত। তার কোন শরীক নেই। আমি একাজের জন্য আদিষ্ট হয়েছি এবং (আল্লাহর কাছে) আত্মসমর্পণকারীদের একজন।
১৯। জবেহ
করার সময় কি দোয়া পড়তে হয়?
জবাই করার সময়
এই দোয়া পড়বে : ‘আল্লাহুম্মা মিনকা ওয়া লাকা' অর্থ : হে আল্লাহ! (এই কোরবানীর
পশু) তোমার পক্ষ থেকে প্রাপ্ত এবং তোমারই জন্য উৎসর্গকৃত। এরপর ‘বিসমিল্লাহ আল্লাহু আকবার' পড়বে। (অর্থ : মহান আল্লাহর নামে শুরু করছি। আল্লাহ
সবচেয়ে বড়।)
২০। জেবেহ
করার পর কি দোয়া পড়তে হয়
জবাই করার পর এই দোয়া পড়বে : ‘আল্লাহুম্মা তাকাববালহু মিন্নি কামা তাকাববালতা মিন হাবিবিকা মুহাম্মাদিন ওয়া খলিলিকা ইব্রাহিমা আলাইহিমাস সালাম'।
অর্থাৎ ‘হে আল্লাহ! এই কোরবানীটি আমার পক্ষ থেকে কবুল করুন, আপনি যেরূপভাবে তা কবুল করেছিলেন আপনার প্রিয় বন্ধুদ্বয় মুহাম্মদ (সা.) ও ইব্রাহিম (আ.)-এর পক্ষ থেকে
২১। কুরবানী
পশুর গোস্ত কতভাগ করতে হবে?
(১) কোরবানীর পশুর গোস্ত তিন ভাগ করে এক ভাগ গরীব মানুষকে, এক ভাগ আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীকে দিবে। বাকি
এক ভাগ নিজে খাবে। আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশী গোস্ত নিতে আসবে এই অপেক্ষা না করে নিজ দায়িত্বে তাদের ঘরে
গোস্ত পৌঁছে দেয়া উচিত।
২২। ভাগে
কুরবানীতে আন্দাজে ভাগ করা কি জায়েজ?
যদি একাধিক
শরীক থাকে তাহলে গোস্ত ভাগ করবে ওজন করে। অনুমান
বা আন্দাজ করে নয়। কারণ
অনুমান করে ভাগ করলে বেশকম হতে পারে, যা গুণাহের কারণ।
২৩। কসাইকে
কি গোস্ত দিয়ে মজুরি দেয়া যাবে
যে কসাই গোস্ত
তৈরি করে দিবে তাকে আলাদাভাবে কাজের জন্য মজুরি দিতে হবে। মজুরি
হিসেবে কোরবানীর গোস্ত দেয়া জায়েজ নেই। তার
প্রাপ্য মজুরি দেয়ার পর লিল্লাহ গোস্ত আলাদা দেবে।
২৪। কুরবানীর
গোস্ত কতদিন খাওয়া যাবে
উ: কোরবানী যেহেতু আল্লাহর জন্য করা হয়, তাই এতে নিজে ভোগ
করার চেয়ে গরীব মানুষের মুখে হাসি ফুটানোর চেষ্টা বেশি করা উচিত। কোরবানীর গোস্ত নিজে খাবে,
অন্যকে খাওয়াবে, যতদিন ইচ্ছা রেখে খাওয়া যায়,
এতে কোন বাধা নেই।
২৫। কুরবানীর
চামড়া নিজে ব্যবহার করা যাবে কি? চামড়া কি করা উত্তম
কোরবানীর পশুর
চামড়া নিজে ব্যবহার করতে পারবে। অথবা অন্যকে উপহারও দিতে পারবে। উত্তম হচ্ছে পশুর চামড়া কোন মাদরাসার
পরিচালককে উপহার দিয়ে দেয়া। তাহলে
তিনি এটা বিক্রি করে মাদরাসার যে কোন কাজে লাগাতে পারবেন। উল্লেখ্য, বর্তমান পৃথিবীতে ইসলামী জ্ঞান-বিজ্ঞানের কেন্দ্রবিন্দু
হলো মাদরাসা। তাই
মাদরাসায় আর্থিক সহায়তা করা সব মুসলমানের দায়িত্ব। কোরবানীর
পশুর চামড়া দানের মাধ্যমে আমরা সেই দায়িত্ব পালন করতে পারি।
২৬। চামড়া
বিক্রী করে দিলে সে টাকা কি করা উচিত?
চামড়া যদি বিক্রি
করা হয় তাহলে তার মূল্য অবশ্যই গরীব মানুষের মধ্যে দান করে দিতে হবে। নিজে
ব্যবহার করা যাবে না। চেষ্টা করা উচিত চামড়ার টাকা পরিবর্তন
না করে হুবহু দান করে দিতে
২৭। চামড়া
কার কাছে বিক্রী করলে ভাল হবে?
চামড়া সাধারণ
ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রির চেয়ে কোনো মাদরাসা কর্তৃপক্ষের কাছে বিক্রি করা উত্তম। কারণ
তারা এ থেকে উপার্জিত সম্পূর্ণ অর্থ ইসলামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ব্যয় করবে।
২৮। কুরবানীর
সাথে আকিকার নিয়ম কি
উ: কোরবানীর সাথে আকিকা দেয়া যায়। এতে
কোন সমস্যা নেই। কোরবানীর
গোস্তের মতো আকিকার গোস্তও নিজে খেতে পারবে, অপরকে খাওয়াতে
পারবে, দিতেও পারবে। ছেলের
আকিকা হলে দুইটি ছাগল অথবা গরুতে দুই শরীক এবং মেয়ের আকিকা হলে একটি ছাগল অথবা গরুতে
এক শরীক দিতে হবে। যেমন
একটি হাদীসে এসেছে, বিখ্যাত সাহাবী হযরত আমর ইবনে শোয়াইব
(রা.) বলেন, প্রিয় নবী
(সা.) বলেন, যার সন্তান হয়
সে যদি চায় আকিকা দিতে, তাহলে ছেলে সন্তান হলে দুটি ছাগল এবং
মেয়ে সন্তান হলে একটি ছাগল আকিকা দিবে। আবু
দাউদ, নাসায়ী।
২৯। মৃত
ব্যক্তি যদি কুরবানীর অছিয়ত করে যায় তাহলে সে গোস্ত কি করতে হবে
উ: মৃত ব্যক্তি মৃত্যুর আগে যদি অছিয়ত করে যায় সে অছিয়েত মোতাবেক যদি কুরবানী
করা হয় তাহলে সে কুরবানীর গোস্ত ধনীরা খেতে পারবে না বরং তা গরীবদের দান করে
দিতেহবে।
৩০। গরীব
লোক কুরবানী করলে তার হকুম কি
উ: কোন গরীব লোক যার উপর কুরবানী ওয়াজিব নয় সে যদি কুরবানীর নিয়তে কোন পশু
কিনে নিয়ে আসে তখন তার উপর সে পশুটি কুরবানী করা ওয়াজিব হয়ে যায়।
৩১।কুরবানির
পশুর বয়স নির্ধারনের বেপারে কোরআন হাদীসের কোথাও কি দাঁত দেখার কথা বলা আছে?
উ: না, দাঁত দেখা বা পড়ে যাবার কোন কথা হাদীসে আসেনি।
বরং কুরবানী উপযুক্ত বয়সের কথা হাদীসে এসেছে। দাঁত দেখার বিষয়টি আসলে উলামাগণ ও বিজ্ঞ
ব্যক্তিগণ বলে থাকেন অভিজ্ঞতার আলোকে। সেটা
হল, বকরী, দুম্বা ও ভেড়ার
এক বছর পূর্ণ হলে সাধারণত তার দুধের দাঁত পড়ে যায়।
আর উটের ৫ বছর
হলে এবং গরুর দুই বছর পূর্ণ হলে দাঁত পড়ে। এ হিসেবে দাঁত পড়ার বিষয়টি সমাজে প্রচলিত
হয়েছে। মূলত দাঁতের সাথে কুরবানী পশুর বয়সসীমার সাথে কোন সম্পর্ক নেই। বরং এটি অভিজ্ঞতার
আলোকে মানুষ বলে থাকে।
৩২।কুরবানী
পশুর গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ রেখে বাকি অংশ থেকে গরীবদের দান করলে কুরবানী হবে না?
উ: হ্যাঁ, হবে। শুধু
তাই নয়, যদি কুরবানীকৃত পশুর পুরোটাই নিজের জন্য রেখে
দেয়, তবুও কুরবানী হবে। তবে
এমনটি না করে গরীবদের তিন ভাগের এক ভাগ দেয়া, আত্মিয়স্বজনকে
১ ভাগ দেয়া উত্তম।
৩৩। কেহ
যদি কুরবানী না করে গরুর মধ্যে শুধু আকিকার জন্য হিচ্ছা নেয় তাহলে কি জায়েজ হবে
উ: কারো উপর যদি কুরবানী ওয়াজিব না হয় তাহলে সে যদি নিজের সন্তানের জন্য কারো
সাতে আকিকা করার জন্য কুরবানীর পশুতে শরীক হয় তাহলে তা জায়েজ হবে।
৩৪। একজনের
নিয়ত খারাপ হলে অংশীদারী অন্যদের কুরবানী কেন নষ্ট হবে
উ: সামান্য ১টি উদাহারন দিলে কথাটা ক্লিয়ার হবে যেমন
সাতজন মিলে
এক বালতিতে পানি রাখলো, এখন একজন যদি নাপাক পানি রাখে,
তাহলে বাকি ৬ জনের পাক পানিও নাপাক হয়ে যাবে
একসাথে হবার কারণে।
১ জনের নিয়ত খারাপ হওয়ায় বাকী ৬জনের কুরবানীও খারাপ হয়ে
যাবে।
৩৫।ক্যাশ
টাকা না থাকলে স্বর্ণ বিক্রি করে কুরবানী দেয়া আবশ্যক?
উ: ধরুন এক মহিলার কাছে ২ ভড়ি স্বর্ণ আর ১০ হাজার টাকা আছে এখন রূপার নেসাব অনুযায়ী
তার উপর কুরবানী আদায় করা ফরজ ছিল এখন কোরবানীর ক্ষেত্রে
তো ১০ হাজারে তেমন কোন প্রানী পাওয়া যায় না এই ক্ষেত্রে করনীয় কি সে কি স্বর্ণ বিক্রি
করে কোরবানির পশু কিনবে?
এর উত্তর
হল
এক্ষেত্রে কারো
কাছ থেকে ধার করে, বা শরীকানা কুরবানীতে অংশ নিয়ে, বা বকরী ইত্যাদির মাধ্যমে কিংবা প্রয়োজনে স্বর্ণ বিক্রি করে হলেও কুরবানী করা
আবশ্যক।
عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَنْ كَانَ
لَهُ سَعَةٌ، وَلَمْ يُضَحِّ، فَلَا يَقْرَبَنَّ مُصَلَّانَا»
হযরত আবূ হুরায়রা
রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তির কোরবানী করার সক্ষমতা
রয়েছে, কিন্তু কুরবানী করেনি, সে যেন আমাদের
ঈদগাহে না আসে। [সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস
নং-৩১২৩]
৩৬।এক
গরুতে ছয় ভাগ দুইজন মিলে দিয়ে এক ভাগ মৃত মায়ের নামে কুরবানী দেয়ার হুকুম কী?
উ: কোন সমস্যা নেই। যেহেতু
এখানে কারো অংশই এক সপ্তামাংশ থেকে কম নয়। তাই
অতিরিক্ত অংশ সবাই মিলে যে কারো নামে কুরবানী দিতে পারবে।
৩৭।কুরবানীর
পশু যবেহ করার পূর্বে চামড়া বিক্রি করা জায়িয আছে কি?
জাওয়াব: কুরবানীর পশু অথবা অন্য যে কোন হালাল পশুই হোক, তা যবেহ
করার পূর্বে চামড়া বিক্রি করা জায়িয নেই। এমনিভাবে
বাঁটে দুধ থাকতে, ঝিনুকে মুক্তা থাকতে, মেষের পিঠে লোম থাকতে, সে দুধ, মুক্তা, লোম বিক্রি করা নাজায়িয। (ফতওয়ায়ে শামী)
৩৮কুরবানীর
ভাড়াল খাওয়া কি জায়েজ:
উ: হালাল পশুর ৭টি অংগ খাওয়া হারাম যেমন (রক্ত, পু লিঙ্গ, অন্ডকোষ, স্ত্রী লিঙ্গ,
মাংসগ্রন্থি, মুত্রথলি, পিত্ত)
হাদীসে এসব হারাম হওয়ার বয়ান আছে, এসবকিছু হারাম
হওয়ার কারন হল এসবের মধ্যে নাপাকি আছে, এখানে কিন্তু ভুরির কথা
উল্লেখ নাই, তবে যেহেতু ভুরিও নাপাকি দ্বারা ভর্তি থাকে তাই একদল
ফকিহ কিয়াস করে ভুরি খাওয়াকেও মকরুহে তাহরিমি বলেছেন, আর অপর
দল ভাড়াল খাওয়াকে জায়েজ বলেছেন।
৩৯. কুরবানীর পশুর পেটে যদি বাচ্চা পাওয়া যায় তাহলে কি করতে হবে?
উ: কুরবানীর পশুর পেটে যদি বাচ্চা জীবিত পাওয়া যায় তবে সেটাও জবেহ করে দিতে হবে;
আর যদি জবেহ না করেন তাহলে কুরবানীর দিন অতিবাহিত হওয়ার পর অথ্যাৎ ১২জিলহজের
পর সে বাচ্চাটি সদকা বা দান করে দিতে হবে৷ আর যদি মরা বাচ্চা পাওয়া যায় তবে তা ফেলে
দিতে পারবেন৷ তবে কুরবানীর আগে যদি জানতে পারে যে পশুটি গর্ভবতি তাহলে সেটি
কুরবানী করা মাকরুহ।
৪০। কুরবানী
কতদিন করা যাবে
উ: কুরবানী জিলহজ্ব মাসের ১০, ১১ ও ১২ তারিখ পর্যন্ত
করা যাবে।
৪১। কুরবানীর
দিন যদি কোন কারনে কুরবানী করতে না পারে তাহলে কি করবে
উ: কেউ যদি কুরবানীর দিনগুলোতে ওয়াজিব কুরবানী দিতে না পারে তাহলে কুরবানীর পশু
ক্রয় না করে থাকলে তার উপর কুরবানীর উপযুক্ত একটি ছাগলের মূল্য সদকা করা ওয়াজিব। আর
যদি পশু ক্রয় করে ছিল, কিন্তু কোনো কারণে কুরবানী দেওয়া
হয়নি তাহলে ঐ পশু জীবিত সদকা করে দিবে
৪২। কুরবানীর
দিনে যবেহ করতে না পারলে যদি কুরবানীর
দিনের পর পশু যবেহ করে তার গোস্ত কি করবে?
উ:কুরবানীর দিনগুলোতে যদি জবাই করতে না পারে তাহলে খরিদকৃত পশুই সদকা করে দিতে
হবে। তবে যদি (সময়ের পরে) জবাই করে ফেলে তাহলে পুরো গোশত সদকা করে
দিতে হবে। এক্ষেত্রে
গোশতের মূল্য যদি জীবিত পশুর চেয়ে কমে যায় তাহলে যে পরিমাণ মূল্য হ্রাস পেল তা-ও সদকা করতে হবে।
৪৩
কুরবানীতে হরিন যবেহ করা কি যাবে
উ: উট, গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা দ্বারা কুরবানী করা জায়েয। এসব
গৃহপালিত পশু ছাড়া অন্যান্য পশু যেমন হরিণ, বন্যগরু ইত্যাদি
দ্বারা কুরবানী করা জায়েয নয়।
৪৪। কুরবানীর
পশু হারিয়ে গেলে কি করবে
উ:কুরবানীর পশু হারিয়ে যাওয়ার পরে যদি আরেকটি কেনা হয় এবং পরে হারানোটিও পাওয়া
যায় তাহলে কুরবানীদাতা গরীব হলে (যার উপর কুরবানী ওয়াজিব নয়)
দুটি পশুই কুরবানী করা ওয়াজিব। আর
ধনী হলে কোনো একটি কুরবানী করলেই হবে। তবে
দুটি কুরবানী করাই উত্তম।
৪৫। ২
জন মিলে জবেহ করলে যদি ১ জন বিসমিল্লাহ না বলে?
উঃঅনেক সময়
জবাইকারীর জবাই সম্পন্ন হয় না, তখন কসাই বা অন্য কেউ
জবাই সম্পন্ন করে থাকে। এক্ষেত্রে
অবশ্যই উভয়কেই নিজ নিজ যবাইয়ের আগে ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহু
আকবার’ পড়তে হবে। যদি
কোনো একজন না পড়ে তবে ওই কুরবানী সহীহ হবে না এবং জবাইকৃত পশুও হালাল হবে না।
৪৬।কোন
শরীকের মৃত্যু ঘটলে
উঃ কয়েকজন
মিলে কুরবানী করার ক্ষেত্রে জবাইয়ের আগে কোনো শরীকের মৃত্যু হলে তার ওয়ারিসরা যদি
মৃতের পক্ষ থেকে কুরবানী করার অনুমতি দেয় তবে তা জায়েয হবে। নতুবা ওই শরীকের টাকা
ফেরত দিতে হবে। অবশ্য তার
স্থলে অন্যকে শরীক করা যাবে। -বাদায়েউস সানায়ে
৪/২০৯, আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২৬, কাযীখান ৩/৩৫১
৪৭। মৃত
ব্যক্তি অসিয়ত না করলে সে গোস্ত কি খাওয়া যায়?
উঃ মৃতের পক্ষ থেকে কুরবানী করা জায়েয। মৃত ব্যক্তি
যদি ওসিয়ত না করে থাকে তবে সেটি নফল কুরবানী হিসেবে গণ্য হবে। কুরবানীর স্বাভাবিক
গোশতের মতো তা নিজেরাও খেতে পারবে এবং আত্মীয়-স্বজনকেও দিতে পারবে। আর যদি মৃত ব্যক্তি কুরবানীর ওসিয়ত করে গিয়ে থাকে তবে
এর গোশত নিজেরা খেতে পারবে না। গরীব-মিসকীনদের মাঝে সদকা করে
দিতে হবে।
৪৮। কুরবানীর
গোশত, চর্বি বিক্রি করা যাবে কি?
উঃ
কুরবানীর গোশত, চর্বি ইত্যাদি বিক্রি করা জায়েয নয়। বিক্রি
করলে পূর্ণ মূল্য সদকা করে দিতে হবে। -ইলাউস সুনান ১৭/২৫৯, বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৫,
কাযীখান ৩/৩৫৪, আলমগীরী ৫/৩০১
৪৯।অন্য
কারো ওয়াজিব কুরবানী আদায় করতে চাইলে অনুমতির দরকার আছে কি?
উঃ অন্যের ওয়াজিব
কুরবানী দিতে চাইলে ওই ব্যক্তির অনুমতি নিতে হবে। নতুবা ওই ব্যক্তির কুরবানী আদায়
হবে না। অবশ্য স্বামী বা পিতা যদি স্ত্রী বা সন্তানের বিনা অনুমতিতে তার পক্ষ থেকে
কুরবানী করে তাহলে তাদের কুরবানী আদায় হয়ে যাবে। তবে অনুমতি নিয়ে আদায় করা ভালো।
৫০।ঋণ
করে কুরবানী করা কি জায়েজ?
উঃ কুরবানী
ওয়াজিব এমন ব্যক্তিও ঋণের টাকা দিয়ে কুরবানী করলে ওয়াজিব আদায় হয়ে যাবে। তবে সুদের
উপর ঋণ নিয়ে কুরবানী করা যাবে না।
৫১। নবী
কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পক্ষ থেকে কুরবানী করা কেমন?
উঃ. সামর্থ্যবান ব্যক্তির রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পক্ষ
থেকে কুরবানী করা উত্তম। এটি বড় সৌভাগ্যের বিষয়ও বটে। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম আলী রা.কে তার পক্ষ থেকে কুরবানী করার ওসিয়্যত করেছিলেন।
তাই তিনি প্রতি বছর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পক্ষ থেকেও কুরবানী
দিতেন। -সুনানে আবু দাউদ ২/২৯, জামে তিরমিযী ১/২৭৫, ইলাউস সুনান
১৭/২৬৮, মিশকাত ৩/৩০৯
৫২।কোন
দিন কুরবানী করা উত্তম
মাসআলা : ১০, ১১ ও ১২ এ তিন দিনের মধ্যে প্রথম দিন কুরবানী করা
অধিক উত্তম। এরপর দ্বিতীয় দিন, এরপর তৃতীয় দিন। -রদ্দুল মুহতার ৬/৩১৬
৫৩। বিদেশে
অবস্থানরত ব্যক্তির কুরবানী অন্যত্রে করা কি জায়েজ?
মাসআলা : বিদেশে অবস্থানরত ব্যক্তির জন্য নিজ দেশে বা অন্য কোথাও কুরবানী করা জায়েয।
৫৪।কুরবানীর
গোশত দিয়ে খানা শুরু করা
মাসআলা : ঈদুল আযহার দিন সর্বপ্রথম নিজ কুরবানীর গোশত দিয়ে খানা শুরু করা সুন্নত। অর্থাৎ
সকাল থেকে কিছু না খেয়ে প্রথমে কুরবানীর গোশত খাওয়া সুন্নত। এই সুন্নত শুধু ১০ যিলহজ্বের
জন্য। ১১ বা ১২ তারিখের গোশত দিয়ে খানা শুরু করা সুন্নত নয়। -জামে তিরমিযী ১/১২০, শরহুল মুনয়া
৫৬৬, আদ্দুররুল মুখতার ২/১৭৬, আলবাহরুর রায়েক ২/১৬৩
৫৫।কুরবানীর
পশুর হাড় বিক্রি
মাসআলা : কুরবানীর মৌসুমে অনেক কুরবানীর হাড় ক্রয় করে থাকে। টোকাইরা বাড়ি বাড়ি থেকে
হাড় সংগ্রহ করে তাদের কাছে বিক্রি করে। এদের ক্রয়-বিক্রয় জায়েয।
এতে কোনো অসুবিধা নেই। কিন্তু কোনো কুরবানীদাতার জন্য নিজ কুরবানীর কোনো কিছু এমনকি
হাড়ও বিক্রি করা জায়েয হবে না। করলে মূল্য সদকা করে দিতে হবে। -বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৫, কাযীখান ৩/৩৫৪, ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩০১
৫৬।রাতে
কুরবানী করা
মাসআলা : ১০ ও ১১ তারিখ দিবাগত রাতে কুরবানী
করা জায়েয। তবে রাতে আলোস্বল্পতার দরুণ জবাইয়ে ত্রুটি হতে পারে বিধায় রাতে জবাই
করা অনুত্তম। অবশ্য পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা থাকলে রাতে জবাই করতে কোনো অসুবিধা নেই।
-ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৪৫, আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২০, ফাতাওয়া
হিন্দিয়া ৫/২৯৬, আহসানুল ফাতাওয়া ৭/৫১০
৫৭।কাজের
লোককে কুরবানীর গোশত খাওয়ানো
মাসআলা : কুরবানীর পশুর কোনো কিছু পারিশ্রমিক হিসাবে দেওয়া জায়েয নয়। গোশতও পারিশ্রমিক
হিসেবে কাজের লোককে দেওয়া যাবে না। অবশ্য এ সময় ঘরের অন্যান্য সদস্যদের মতো কাজের
লোকদেরকেও গোশত খাওয়ানো যাবে।-আহকামুল কুরআন জাস্সাস ৩/২৩৭, বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৪,
আলবাহরুর রায়েক ৮/৩২৬, ইমদাদুল
মুফতীন
৫৮) প্রশ্ন
বিগত বছর কুরবানী করি নাই এ বছর কি কুরবানী কাযা করতে পারব?
উত্তরঃ ধরুন
আপনি গত ৬ বছর যাবৎ কোন কারনে কুরবানী করতে পারেন নি অথচ আপনি ধনী ছিলেন, কুরবানী আপনার উপর ওয়াজিব ছিল, এখন আপনি চাচ্ছেন এ বছর
বিগত ৬ বছরের ৬ হিস্সা এবং এ বছরের ১ হিস্সা মিলিয়ে ৭ হিস্সা দিয়ে ১টি গরু কিনে কুরবানী
করবেন। এমনি
করা আপনার জন্য জায়েজ হবেনা।
কারন কুরবানীর
যে দিন আছে ১০-১২ জিলহজ্ব এই ৩ দিন যদি কুরবানী করা সম্ভব না
হয় তাহলে পরে ১টি ছাগলের মূল্য সদকা করতে হবে। এখন
কেহ যদি ৬ বছর কুরবানী না করে সে ৬টি ছাগলের মূল্য সদকা করে দিতে হবে।
ফতোয়ার কিতাব
বাদায়েউস সানায়ে ৪থ খন্ডের ২০২ পৃষ্ঠায় আছে- (কুরবানীর কাজা
রক্ত প্রবাহিত করার দ্বারা হয়না, কেননা রক্ত প্রবাহিত করার দ্বারা
নৈকট্য হাসিল হয়না, তবে তা নিদৃষ্ট সময়সীমার সাথে সম্পর্কিত,
তাই সময় অতিবাহিত হওয়ার পর আর রক্ত প্রবাহিত করার দ্বারা কুরবত হাছিল
হয়না। সে
জন্য কোন নিসাবের মালিক যদি কুরবানীর জন্য পশুও খরিদ না করে আর আয়্যামে নহরও অতিবাহিত
হয়ে যায় তার জন্য একটি ছাগলের মূল্য সদকা করা লাজেম।
তবে যদি পশু
খরিদ করেছে কিন্তু কুরবানীর দিনসমুহে জবেহ করতে পারেনি তাহলে সে কুরবানীর পর সে পশুটি
সদকা করে দিবে। (বাহারে শরীয়ত ৩য় খন্ড,
১৫ পাঠ, ৩৩৮ পৃ)
৫৯) প্রশ্ন: কেহ যদি বিগত বছরের কুরবানী করে সে গোস্ত কি করবে?
উঃ যদি কেহ
এ বছর কুরবানীর সাথে বিগত বছরের কুরবানী করার নিয়ত করে তাহলে এ বছরের কুরবানী হয়ে যাবে
তবে বিগত বছরের নিয়ত করার কারনে সে পশুর সমস্ত গোস্ত সদকা করে দিতে হবে।(রদ্দুল মুখতার ৯ম খন্ড ৫৪০)
৬০) প্রশ্ন: যে সব ধনী আগে কুরবানী করেনি তারা কি করবে?
উঃ কোন ধনী
লোক যদি কুরবানী না করে সে গুনাহগার হবে এর জন্য তওবা করবে এবং এখন সে যত বছর সাহেবে
নিসাব ছিল কিন্তু কুরবানী করেনি তত বছর হিসাব করে প্রতি বছরের জন্য ১টি ছাগলের মূল্য
সদকা করে দিবে।
৬১)
প্রশ্নঃ টাকা ধার দিয়েছি সে টাকার উপর কি কুরবানী করতে হবে?
উঃ ফতোয়ায়ে
আলমগীরির ৫ম খন্ডের ২৯২ পৃষ্ঠায় ফতোয়া লিখা হয়েছে - যে ব্যক্তির মাল তার হাতে নাই, আর কুরবানীর দিন সমুহে
তা সে পাবেও না, বরং কুরবানীর পর পাবে তাহলে তার উপর কুরবানী
ওয়াজিব নয়।
উদাহারন- জায়েদ এর কাছে মোট ১ লাখ টাকা আছে, এ ছাড়া তার কাছে আর
কোন টাকা পয়সা নাই, কিন্তু সে রমজান মাসে তা কাশেম কে ধার দিয়েছে
এবং কাশেম সে ১ লাখ টাকা জায়েদ কে মহররম মাসে ফেরত দিবে, এখন
কুরবানীর দিন এসে গেল জায়েদের কাছে কুরবানী করার মত আর কোন মালও নাই তখন জায়েদের জন্য
কুরবানী ওয়াজিব নয়। তবে
জায়েদের জন্য জরুরী সে কাশেমের কাছে সে ১ লাখ ঋণ থেকে কিছু টাকা উছুল করে নেয় যাতে
সে কুরবানী করতে পারে, কিন্তু কাশেম যদি না দেয় তাহলে জায়েদের
উপর কুরবানী করা ওয়াজিব হবেনা।
৬২) প্রঃ কুরবানী
ওয়াজিব কিন্তু নগদ টাকা নাই কি করবেন? ঋণ করে কুরবানী করা
কি জায়েজ হবে?
উঃ অনেক সময়
বিশেষ করে মহিলাদের কাছে স্বণ থাকে কিন্তু নগদ টাকা পয়সা থাকেনা, সেক্ষেত্রে মহিলা নেসাবের মালিক অথচ তার কাছে নগদ টাকা পয়সা না থাকায় কুরবানীতে
অংশ গ্রহণ করতে পারেনা তখন সে তার স্বণ থেকে বিক্রী করবে অথবা কারো কাছ থেকে ঋণ নিবে। (ফতোয়ায়ে রযবীয়া ২০তম খন্ড ৩৭০ পৃ)
যার উপর কুরবানী
ওয়াজিব সে কুরবানী করার জন্য তার কিছু মাল বিক্রী করে দিবে অথবা কারো কাছ থেকে ঋণ নিবে
উভয়ই তার জন্য করার সুযোগ আছে।
সুতরাং বুঝা
গেল নগদ টাকা না থাকলে সাহেবে নেসাব প্রয়োজনে ঋণ করেও কুরবানী করতে পারবে।
৬৩) প্রঃ স্ত্রীর
বাকী মহর কি ঋণ হিসেবে গন্য হবে?
বিস্তারিত- যে ব্যক্তির জিম্মার স্ত্রীর ২ লাখ টাকা মহর মুয়াজ্জল বাকী আছে যা তালাক হলে
দিতে হবে এখন কুরবানীর নিসাব হিসাব করার সময় কি সে ২ লাখ টাকা ঋণ হিসাবে গন্য করতে
হবে?
উঃ এ ক্ষেত্রে
যাদের স্ত্রীর মহর বাকী আছে সে মহর কুরবানী ওয়াজিব হওয়ার জন্য বাঁধার কারন হবে না। এই
বাকী মহর যাকাতের জন্য যেমন বাঁধার কারন নয় তেমনি কুরবানীর জন্যও বাঁধার কারন নয়। (রদ্দুল মুখতার ৩য় খন্ড ১৭৭ পৃ)
৬৪)
কুরবানি কার পক্ষ থেকে করতে হবে?
সন্তানের জন্য
মা বাবার পক্ষ থেকে কুরবানী করা ওয়াজিব নয়। কুরবানী
ওয়াজিব হল যিনি নিসাবের মালিক তার।
কিন্তু আমাদের
সমাজে দেখা যায় নিসাবের মালিক ছেলে কুরবানী করছে মায়ের, বা বাবার। যিনি
নিসাবের মালিক আগে উনার জন্য ওয়াজিব হল নিজের ওয়াজিব আদায় করবে তারপর অতিরিক্ত হিস্সা
যদি থাকে তাকে অন্যান্যদের নাম দিবে।
৬৫) কত
টাকা ঋণ থাকলে কুরবানি করা লাগবে না?
কর্জ ২ ধরনের
১টি হল মেয়াদি, অপরটি হল যে কোন সময় চাইতে পারে, যদি কজ ৬ মাস বা ১ বছর পর পরিশোধ করতে হবে এমন হয় সে কজ থাকলে কুরবানীর দিন
যদি আপনার কাছে 90 হাজার টাকার মত সম্পদ থাকে তাহলে আপনার উপর কুরবানী ওয়াজিব।
মোটামোটি গাইরে
মেয়াদী কজ যা কর্জদার যে কোন সময় চাইতে পারে সেটা বাদ দেয়ার পর যার কাছে সাড়ে বাহান্ন
তোলা রুপার সমপরিমাণ সম্পদ থাকবে যার বাজার মূল্য প্রায় 90 হাজার হয় তার উপর কুরবানী
ওয়াজিব,
ঈদুল আযহা
উপলক্ষে যে সব বিষয় বর্জনীয়
নিয়ত
সংক্রান্ত বর্জনীয়
১) কুরবানি না করলে লোকে কি বলবে এমন নিয়ত বজনীয়
২) কুরবানি না করলে ছেলে মেয়েরা মনে কষ্ট পাবে এমন নিয়ত বজনীয়
৩) গোস্ত খাওয়ার নিয়ত বর্জনীয়
পশু ক্রয় সংক্রান্ত বর্জনীয়
১) পশু ক্রয় করে ছবি ফেসবুকে দেয়া বর্জন করতে হবে
২) পশু কম দামে কিনে বেশী দাম বলা বর্জন করতে হবে
৩) পশু কিনার পর এবার গরু কিনে ঠকছি বলা বজন করতে হবে
৪) পশুকে ওজন করে কেনা বজন করতে হবে
কুরবানি সংক্রান্ত বিবিধ বজনীয়
১) বেয়াই বাড়ী থেকে জোর জবরে পশু নিয়ে কুরবানি করা বর্জন করতে হবে
২) ভাগে কুরবানি করে অনুমান করে বন্টন করা বর্জন করতে হবে
৩)শরীক নির্বাচনের সময় হারাম উপাজনকারীকে বর্জন করতে হবে
৪) শরীক নির্বাচনের সময় যে আগের বছরের কাজা কুরবানির নিয়ত করেছে তাকে বর্জন
করতে হবে
৫) কুরবানির পশু ক্রয় করে তার থেকে কোন ফায়দা নেয়া বর্জন করতে হবে, যেমন তার উপর সওয়ার হওয়া, তার দুধ খাওয়া, চাষ করা ইত্যাদি।
৬) কসাইকে গোস্ত দিয়ে মুজুরী দেয়া বর্জন করতে হবে
৭) রুগ্ন ,দুবল, খোড়া, কানা, লেজ কাটা,পশু কুরবানি করা বর্জন করতে হবে।
কোন মন্তব্য নেই