Header Ads

Header ADS

মক্কা ও কাবা ঘরের ফজিলত। মক্কার ইতিহাস। মক্কার ফজিলত। কাবার ইতিহাস কাবার ফজিলত

 

জিলকদ- ১৪৪৪ হিজরী ২//২০২৩ ইং

মক্কা ও কাবা ঘরের ফজিলত



إِنَّ أَوَّلَ بَيْتٍ وُضِعَ لِلنَّاسِ لَلَّذِي بِبَكَّةَ مُبَارَكًا وَهُدًى لِّلْعَالَمِينَ

নিঃসন্দেহে সর্বপ্রথম ঘর যা মানুষের জন্যে নির্ধারিত হয়েছে, সেটাই হচ্ছে এ ঘর, যা মক্কায় অবস্থিত এবং সারা জাহানের মানুষের জন্য হেদায়েত ও বরকতময়। [সুরা ইমরান - :৯৬]

মক্কাকে বাক্কা বলার কারন কি?

স্থানে আসলে সকলের অহংকার চুন হয়ে যায় যেমন আবরাহা বাদশার অহংকার চুণ হয়ে গিয়েছিল হস্তি বাহিনি নিয়ে এসেছিল মক্কা নগরীতে আল্লাহ তায়ালা আবাবিল পাখি দিয়ে তাদের সব দম্ভ অহংকারকে চুণ করে দিয়েছিলেন

মক্কার আর কি কি নাম আছে?

যে জিনিষের নাম বেশী সেটির দাম সম্মানও বেশী

মক্কার আরো অনেক নাম আছে যেমন

বায়তুল আতিক, বায়তুল হারাম, বালাদুল আমিন, উম্মে রহম, হাতিম, বাইয়্যেনা, কাদিস, মুকাদ্দাস, বাসসাহ, কাওছা, বালাদা, মক্কা, বাক্কা ইত্যাদি

মক্কার কয়েকটি পয়েন্ট

মক্কা হল মুসলমানদের কেবলা, সারা বিশ্বের মুসলমানদের বাৎসরিক মোলাকাতের স্থান হজ্বের মরকজ হল এই মক্কা নগরী একদম শুরু থেকেই এই মক্কা নগরী হল হারাম তথা মর্যাদাময় শহর

এই শহরের সবচেয়ে সম্মানিত ঘর হল কাবা, যে কাবা ঘর আল্লাহর তৈরী সর্বপ্রথম ঘর নির্মিত

এই শহরের আরেকটি নাম হল নিরাপত্তার নগরী হারাম শরীফে গাছের পাতাও ছিড়া নিষিদ্ধ এমন কি পশু পাখিকেও মারা ভয় লাগিয়ে তাড়িয়ে দেয়া নিষিদ্ধ 

হারামে হত্যাকারীর প্রতিশোধ নেয়া !

#এই হারামের এরিয়ায় তখন কোন হত্যাকারীও প্রবেশ করলে তার থেকে প্রতিশোধ নেয়া যেতনা যতক্ষণ না সে হারাম এরিয়া থেকে বের হত

মক্কা বিজয়ে নবী কেন এই হারামে যুদ্ধ করেন?

#এই নগরীতে যুদ্ধ বিগ্রহ হারাম, সৃষ্টি থেকে কেয়ামত পযন্ত হারাম, তবে নবী করিম () বলেন মক্কা বিজয়ের দিন কয়েক ঘন্টার জন্য আমাকে অনুমতি দেয়া হযেছে এরপর কেয়ামত পযন্ত এই এলাকায় আর কোন যুদ্ধ বিগ্রহ বৈধ নয়

- শিকারযোগ্য যে কোনো হালাল জানোয়ার হত্যা করা হারাম।

- শিকারযোগ্য প্রাণী হত্যার জন্য অস্ত্র সরবরাহ কিংবা ইসারা করে দেখিয়ে দেয়ার দ্বারা সাহায্য করাও হারাম।

- হারাম সীমানায় গাছ কাটা এমনকি তাজা ঘাস কাটা বা ছেঁড়াও হারাম।

- হারাম সীমানায় কোনো জিনিস পড়ে থাকলে সেটা ওঠানোও যাবে না। তবে ওই ব্যক্তি তা ওঠাতে পারবে; যে তার প্রকৃত মালিকের সন্ধান দিতে পারবে।

পবিত্র কোরআনের ঘোষণা

 اِنَّمَاۤ اُمِرۡتُ اَنۡ اَعۡبُدَ رَبَّ هٰذِهِ الۡبَلۡدَۃِ الَّذِیۡ حَرَّمَهَا وَ لَهٗ کُلُّ شَیۡءٍ ۫ وَّ اُمِرۡتُ اَنۡ اَکُوۡنَ مِنَ الۡمُسۡلِمِیۡنَ

আমি তো আদিষ্ট হয়েছি এই নগরীর রবের ইবাদত করতে, যিনি একে করেছেন সম্মানিত। সবকিছু তাঁরই। আমি আরো আদিষ্ট হয়েছি যেন আমি আত্মসমর্পণ কারীদের অন্তর্ভুক্ত হই।’ (সুরা নামল: ৯১)

হারাম এরিয়ায় ৫টি প্রাণী মারা জায়েজ

عَنْ عَائِشَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ خَمْسٌ مِنْ الدَّوَابِّ كُلُّهُنَّ فَاسِقٌ يَقْتُلُهُنَّ فِي الْحَرَمِ الْغُرَابُ وَالْحِدَأَةُ وَالْعَقْرَبُ وَالْفَأْرَةُ وَالْكَلْبُ الْعَقُورُ

আয়িশাহ্ (রাযি.) হতে বর্ণিত। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ পাঁচ প্রকার প্রাণী এত ক্ষতিকর যে, এগুলোকে হারামের মধ্যেও হত্যা করা যেতে পারে। (যেমন) কাক, চিল, বিচ্ছু, ইঁদুর ও হিংস্র কুকুর।

হারামের সিমানা কতটুকু?

পশ্চিমে ২২ কিলোমিটার হুদায়বিয়া পযন্ত

পূর্বে ১৫ কিলোমিটার ওয়াদিয়ে ওয়াইনা পর্যন্ত

উত্তরে কিলোমিটার তানঈম তথা মসজিদে আয়শা পযন্ত

উত্তর পূর্বে ১৬ কি মি জিরানাহ পযন্ত

দক্ষিণে ১২ কি মি তিহামা পযন্ত এরিয়া হল হারামের অন্তর্ভূক্ত

 

কাবার সম্মান কিভাবে করব?

পেশাব পায়খানা- কাবাঘরের সম্মান ও মর্যাদার কারণে পায়খানা প্রসাবের সময় তা সামনে বা পেছনে রাখতে নিষেধ করেছেন নবীজি (স.)। একইভাবে কেবলার দিকে ফিরে সহবাস করাও নিষিদ্ধ। ইসলামি শরিয়তের এই বিধানের রহস্য হলো, আল্লাহর ঘর ও নিদর্শনের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন,  বুখারীর ৩৯৪ নং হাদিস

لاَ تَسْتَقْبِلُوا الْقِبْلَةَ بِغَائِطٍ أَوْ بَوْلٍ وَلَكِنْ شَرِّقُوا أَوْ غَرِّبُوا.

যখন তোমাদের কেউ পায়খানা-প্রস্রাব করে, তখন যেন সে কেবলার দিকে মুখ বা পিঠ দিয়ে না বসে। (সহিহ বুখারি: ৩৯৪)

কাদের মুখে কিয়ামতের দিন কফ লাগানো থাকবে?

নামাজে ও নামাজের বাহিরে কিবলার দিকে থুথু নিক্ষেপ করা কঠোরভাবে নিষেধ

তারগিবের ২৮১ নং হাদিস আল্লাহর রাসুল (সঃ) বলেছেন, “কিবলার দিকে যে কফ ফেলে, তাঁর চেহারায় ঐ কফ থাকা অবস্থায় সে ব্যক্তিকে কিয়ামতের দিন পুনরুত্থিত করা হবে।

কিবলার দিকে পা লম্বা করা

যদি অসম্মান করার নিয়তে কিবলার দিকে কেহ পা লম্বা করে তাহলে তা কুফুরি হবে, আর যদি অসম্মান করার উদ্দেশ্যে না করে তাহলে মকরুহ হবে। আর যে এলাকায় পম্চিম দিকে পা দেয়াকে খারাপ মনে করে সেখানে পশ্চিম দিকে পা দেয়াটা মকরুহ হবে।

হানাফি মাজহাবের প্রসিদ্ধ কিতাব ফতোয়ায়ে আলমগিরিতে আছে

وَيُكْرَهُ مَدُّ الرِّجْلَيْنِ إلَى الْكَعْبَةِ فِي النَّوْمِ وَغَيْرِهِ عَمْدًا

ইচ্ছাকৃতভাবে ঘুমন্ত অবস্থায় অথবা অন্য কোনো অবস্থায় কাবা শরিফের দিকে পা দেওয়া মাকরুহ। (ফতোয়ায়ে আলমগিরি: ৫/৩১৯, ফতোয়ায়ে মাহমুদিয়া: ২৯/১৭৪)

আদব কায়দা সম্মান প্রদশন এসব হল তাকওয়ার লক্ষণ

وَمَن يُعَظِّمْ شَعَائِرَ اللَّهِ فَإِنَّهَا مِن تَقْوَى الْقُلُوبِ

এটা শ্রবণযোগ্য কেউ আল্লাহর নামযুক্ত বস্তুসমুহের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করলে তা তো তার হৃদয়ের আল্লাহভীতি প্রসূত। [সুরা হাজ্জ্ব - ২২:৩২]

কাবার ছবি যুক্ত যায়নামাজ

আল্লাহর ঘরের আকাশচুম্বি মর্যাদা, সে মর্যাদাবান ঘরের ছবি যদি জায়নামাজে থাকে আর সে জায়নামাজ যদি মানুষ পা দিয়ে পারায় সেটাও না জায়েজ তাই যে সব জায়নামাজে কাবা ঘরের ছবি আছে তা মসিজদে বিছানো না জায়েজ

যদি কেহ ইচ্ছাকৃত কাজ করে সে কুফুরি করল

হাদীসে নাই তাই কিবলার দিকে পা দিব?

** কিবলার দিকে পায়খানা করা, পেশাব করা থুথু দেয়ার ব্যপারে হাদীসে নিষেধাজ্ঞা এসেছে এর কারন হল কাবা ঘরের সম্মানাথে, এখন এর উপর কিয়াস করে যদি কেহ কিবলার দিকে পা দিয়ে ঘুমাতে নিষেধ করে কাবাকে সম্মান এর নিয়তে, সেটা সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য, কিন্তু একদল লোক যারা এর বিরোধীতা করে বলবে কিবলার দিকে পা দেয়া যাবে না এমন কোন হাদিস কি আছে? যেহেতু হাদিসে নাই সেহেতু কিবলার দিকে পা দিয়ে ঘুমানো যাবে অথচ এটা হল স্পষ্ট কাবা ঘরের প্রতি আদবের খেলাফ

# দলের লোকেরা সহিহ হাদিসের চক্করে পরে অনেক আমল করা থেকে বিরত

# এমন কি অনেকসুন্নত আমলকে পযন্ত অস্বীকার করতে তারা দ্বিধাবোধ করেনা

# যেমন নামাজের পর দোয়া করা নবী করিম () যে ফরয নামাজের পর দোয়া করেছেন এর অসংখ্য কওলী ফেলি হাদীস আছে শুধু তাই নয় স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা কোরআনে ফরয নামাজের পর দোয়া করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন যেমন

স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা বলেন সুরা আলাম নাশরাহ  এর মধ্যে (ফাইজা ফারাগতা ফানচাব) এই আয়াতের তফসিরে অসংখ্য মুফাসসির বলেন যখন ফরয নামাজ থেকে বিরত হবেন তখন ফানচাব অর্থ্যাৎ দোয়া করবেন,

) আবদুল্লাহ বিন আব্বাস

) ইমাম সুদ্দি

) হযরত কাতাদা

) ইবনে জারির আত তাবারি

) ইমাম কুরতুবি

) জালাল উদ্দীন সুয়ুতি

) ইমাম আলুসি

) ইমাম ইসমাইল হাক্কি

) ইমাম ইবনু কাসির

এরকম অসংখ্য মুফাসসির একমত আল্লাহ তার রাসুল () কে নির্দেশ করছেন ফাইজা ফারাগতা ফানচাব (আপনি যখন ফরয নামাজ থেকে ফারেগ হবেন তারপর আল্লাহর কাছে দোয়া করবেন)

কাবা শব্দের অথ কি?

কাবা বলা হয় সমতল স্থানে যে অংশ ফুলে উঠে সে ফুলে উঠা অংশকে কাবা বলা হয় যেমন

অজু করার বয়ান দিতে গিয়ে আল্লাহ কোরআনে বলেন (ওয়া আরজুলাকুম ইলাল কাবাইন) অর্থ্যাৎ তোমরা পা ধৌত করা কাবাইন পর্যন্ত আর এর অর্থ হল পায়ের মধ্যে যে ফুলে উঠা জায়গাটা সুতরাং কাবা অথ হল ফুলে উঠা যায়গা

আরশুহু আলাল মা- আরশ পানির উপর ছিল আর সে পানিতে ঢেউ থেকে ফেনার তৈরী হল আর সে ফেনা থেকে মাটির সৃষ্টি আর সে মাটির উপর আল্লাহ প্রথম ঘর নির্মান করলেন যার নাম কাবা যেটা পানিতে চরের মত ফুলে উঠা জায়গায় প্রতিষ্ঠিত বলে তাকে কাবা বলা হয়

সেজন্য মেয়েদেরকেও কোরআনে বলা হয়েছে (কাওয়ায়েবা ওয়া আতরাবা)

কাবা ঘরের জন্য আদম () এর আবেদন

আদম () কে যখন পৃথিবীতে প্রেরণের সিদ্ধান্ত নিল, তখন হযরত আদম () আল্লাহর কাছে আকাশে ফেরেশতাদের যে কাবা ঘর বায়তুল মামুর যাতে ফেরেশতারা তাওয়াফ করে, সে ঘরের মত একটি ঘর পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠা করার জন্য আবেদন করেন আর আদম () এর সে আবেদনের প্রেক্ষিত সে বায়তুল মামুরের সোজা নিচে দুনিয়াতে ফেরেশতাদের মাধ্যমে কাবা ঘর নির্মাণ করে দিলেন

এই কাবা ঘরে আদম () কতবার হজ্ব করেছেন?

কাবা ঘরে হযরত আদম () কোন কোন বননায় ৫৫ বার হজ্ব পালন করেছেন তাওয়োফ করেছেন

কোন নবীর যুগে এই কাবা ঘর ধ্বংস হয়ে যায়?

হযরত নুহ () এর যুগে যখন মহা প্লাবন হয় তখন এই কাবা ঘর ভেঙ্গে যায় ১৫০ দিনের বন্যায় কাবা ঘর পলিমাটিতে ঢাকা পরে যায় আমাদের দেশে মাত্র সপ্তাহ ১০ দিন বন্যা হলে পুরা এলাকা অচল হয়ে যায়, আর নুহ নবীর যুগে মাস যাবৎ বন্যা ছিল সুবহানাল্লাহ পৃথিবীর সব কিছুই তছনছ হয়ে গিয়েছিল

কোন কো নবী এই কাবা ঘরের তাওয়াফ করেছেন

লক্ষ ২৪ হাজার অথবা লক্ষ ২৪ হাজার নবীর সকলেই এই কাবা ঘরে এসেছেন, তবে জন নবী কাবা ঘরে আসতে পারেন নি তার কওমের অত্যাচারের কারনে

কোন কোন নবী কাবা ঘরে আসতে পারেন নি?

যে জন নবী কাবা ঘরে আসতে পারেন নি তারা হলেন-

() হযরত হুদ () আদ জাতির অত্যাচার এত বেশী ছিল যে তিনি কাবা ঘরে আসতে পারেন নি

() হযরত সালেহ () সামুদ জাতির অত্যাচারে কাবা ঘরে আসতে পারেন নাই মাত্র ৪৫০ মাইল দুর থেকেও হযরত সালেহ () মাদায়েনে সালেহ থেকে মক্কায় আসতে পারেন নি

কতদিন কাবা অদৃশ্য ছিল?

নুহ নবী থেকে নিয়ে প্রায় ২৬০০ বছর পযন্ত এই কাবা ঘর অদৃশ্য ছিল, ২৬০০ বছর পর হযরত ইবরাহিম () পুনরায় এই কাবা ঘর একই জায়গায় নির্মান করার জন্য নির্দেশ পেয়ে ইবরাহিম নবী সিরিয়া থেকে মক্কায় গেলেন সে মক্কা নগরীতে ৬৫০০ পাহাড়ের ভিতর কাবা ঘর কোন পাহাড়ের চিপায় আছে তিনি বের করতে পারছিলেন না তখন আল্লাহ তায়ালা এক খন্ড মেঘ পাঠালেন আর ইবরাহিমকে বললেন এই মেঘ যেখানে গিয়ে দাঁড়াবে সেস্থানেই কাবা ঘরের পুরাতন চিহ্ন খুঁজে পাবে সে মোতাবেক হযরত ইবরাহিম () মেঘের ছায়ার দ্বারা কাবা ঘর এর সিমানা খুঁজে পেলেন সুবহানাল্লাহ

কাবা ঘরে কতটি পাহাড়ের পাথর?

নবী ইবরাহিম সীমানা খুজে পেয়ে এবার প্রশ্ন করলে ওহে প্রভু এই কাবা ঘর আমি কোন ধরনের পাথর দিয়ে বানাব? আপনার পছন্দ কি? তখন আল্লাহ তায়ালা ইবরাহিম () কে কাবা ঘরের পাহাড়ের পাথর সংগ্রহের জন্য ৫টি পাহাড়ের নাম বললেন () মিশরের তুর পাহাড় () তুরস্ক থেকে ৮০০ মাইল উত্তরে জুদি পাহাড় যেখানে নুহ নবীর নৌকা ১৫০ দিন প্লাবনের পর থেমেছিল () জর্ডানের যিতা পাহাড়  () তুরে হিরা এটি মক্কার একটি পাহাড় () সিরিয়ার লুবনান পাহাড় (সুত্র তফসিরে ইবনে আব্বাস)

পাথর নিয়ে ইবরাহিমের আরজি:

নবী ইবরাহিম () বলেন হে মাবুদ আমার সাথে কোন লেবার নাই ছোট ১১ বছরের একজন পুত্র ইসমাইল ছাড়া, এখন আমি যদি মিশর থেকে সিরিয়া থেকে জডান থেকে পাথর আনতে যাই তাহলে পাথর আনতে আনতেই সময় শেষ হয়ে যাবে তোমার ঘর তৈরী করা আর হবেনা

তখন আল্লাহ তায়ালা বলেন হে ইবরাহিম আমি তোমাকে পাথর সংগ্রহ করার জন্য বলিনি আমি আমার পছন্দের কথা বলেছি, এবার তুমি শুধু মুখে বল এই পাহাড়ের পাথর গুলি এই ঘরের আশে পাশে তুলার মত এসে এসে পড়বে সুবহানাল্লাহ

পাথরের কি জীবন আছে?

 প্রশ্ন করতে পারেন পাথরের কি জীবন আছে? হ্যাঁ পাথরেরও জীবন আছে যেমন আমার নবী উহুদ পাহাড়ের ব্যপারে বলেন আমি উহুদ পাহাড়কে ভালবাসি, উহুদ পাহাড়ও আমাকে ভালবাসে (muslim 1365)

তাছাড়া সুরা বাকারার ৭৪ নং আয়াতে আল্লাহ বলেন

 ثُمَّ قَسَتۡ قُلُوۡبُکُمۡ مِّنۡۢ بَعۡدِ ذٰلِکَ فَهِیَ کَالۡحِجَارَۃِ اَوۡ اَشَدُّ قَسۡوَۃً ؕ وَ اِنَّ مِنَ الۡحِجَارَۃِ لَمَا یَتَفَجَّرُ مِنۡهُ الۡاَنۡهٰرُ ؕ وَ اِنَّ مِنۡهَا لَمَا یَشَّقَّقُ فَیَخۡرُجُ مِنۡهُ الۡمَآءُ ؕ وَ اِنَّ مِنۡهَا لَمَا یَهۡبِطُ مِنۡ خَشۡیَۃِ اللّٰهِ ؕوَ مَا اللّٰهُ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعۡمَلُوۡنَ ﴿۷۴

অতঃপর তোমাদের অন্তরসমূহ এর পরে কঠিন হয়ে গেল যেন তা পাথরের মত কিংবা তার চেয়েও শক্ত। আর নিশ্চয় পাথরের মধ্যে কিছু আছে, যা থেকে নহর উৎসারিত হয়। আর নিশ্চয় তার মধ্যে কিছু আছে যা চূর্ণ হয়। ফলে তা থেকে পানি বের হয়। আর নিশ্চয় তার মধ্যে কিছু আছে যা আল্লাহর ভয়ে ধ্বসে পড়ে। আর আল্লাহ তোমরা যা কর, সে সম্পর্কে গাফেল নন। 

 

আয়াতে আল্লাহ ইহুদীদের মনকে পাথরের চেয়ে কঠিন তা বুঝিয়েছেন কারন ইহুদীরা নবীদের মুজেজা সমুহ দেখার পরও তারা সত্যকে গ্রহণ করেনা,

অথচ পাথরের মধ্যে এমন পাথরও আছে যা থেকে পানি বের হয়, কিন্তু ইহুদীদের চোখ দিয়ে পানি বের হয়না, মন ঘামেনা, অনেক পাথর আল্লাহর ভয়ে পাহাড় থেকে খসে পড়ে কিন্তু ইহুদীরা তার চেয়েও কঠিন হৃদয়ের তারা সত্যকে সহজে গ্রহণ করতে চায়না

এখন আমাদের মুসলমানদের মধ্যে ধরনের কঠিন পাথরের মত হৃদয়ের অনেক মানুষ আছে যারা সত্যকে সহজে গ্রহণ করতে চায়না, সবকিছুতে শুধু দলিল খোঁজে দলিল দিলেও তাদের মন ভরেনা, কারন তারা যদিও নিজেদেরকে কোরআন হাদীসের মান্যকারী বলে আসলে তারা হল মুলত শায়খের অন্ধ পুঁজাকারী তার শায়খ যেটা বলেছে সেটাই সে মানবে তার বিপরীতে যদি হাজারো কোরআন হাদীসের দলিল দেন সে সেটা মানতে নারাজ

·       অতএব আল্লাহর হকুমে হযরত ইবরাহিম নবীর ডাকে ৫টি পাহাড়ের পাথর সমুহ উড়ে উড়ে কাবার আশে পাশে জমা হতে লাগল কারন তারা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ একটি ঘরের অংশ হবে সেই সৌভাগ্য লাভের আশায় তারা উড়ে উড়ে চলে আসতে লাগল সুবহানাল্লাহ

সৌভাগ্যবানদের টাকাই মসজিদে উড়ে উড়ে আসে

দুনিয়ার মধ্যে সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ জায়গা হল মসজিদে আর সর্বনিকৃষ্ট জায়গা হল বাজার,

আর এই শ্রেষ্ঠ ঘর মসজিদের মধ্যে যারা সৌভাগ্যবান তারাই রড দিতে পারে, সিমেন্ট দিতে পারে, টাকা খরচ করতে পারে, মেধা খরচ করতে পারে, আপনি মনে করছেন আপনি মসজিদে খরচ করছেন নয় নয় আপনার টাকা আল্লাহ তার ঘরের জন্য কবুল করেছেন বলেই আপনি সেটাকে মসজিদে দিতে পেরেছেন তাই সম্পদ থাকতে কিছু অংশ মসজিদে দিয়ে যান আপনি মরার পর কবরে কেয়ামত পযন্ত সদকায়ে জারিয়া হিসেবে যোগ হতে থাকবে ইনশা আল্লাহ

নবী ইবরাহিমের ডাকে যেমন ৫টি পাহাড়ের পাথর উড়ে উড়ে মসজিদে কাবার সাথে লাগার জন্য চলে এসেছে, তেমনি আপনার টাকাও মসজিদে লাগার জন্য যদি আসে সেটাকে সৌভাগ্য মনে করুন

ইবরাহিম কিভাবে ঘরে বুঝিয়ে দিলেন?

ইবরাহিম নবী কাবা ঘর নির্মান করে সে ঘর আল্লাহকে বুঝিয়ে দিলেন দোয়া করে করে আর বললেন সুরা বাকারার ১২৭ নং আয়াতে

وَإِذْ يَرْفَعُ إِبْرَاهِيمُ الْقَوَاعِدَ مِنَ الْبَيْتِ وَإِسْمَاعِيلُ رَبَّنَا تَقَبَّلْ مِنَّا إِنَّكَ أَنتَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ

স্মরণ কর, যখন ইব্রাহীম ও ইসমাঈল কা'বাগৃহের ভিত্তি স্থাপন করছিল। তারা দোয়া করেছিলঃ পরওয়ারদেগার! আমাদের থেকে কবুল কর। নিশ্চয়ই তুমি শ্রবণকারী, সর্বজ্ঞ[সুরা বাকারা - ২:১২৭]

আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকেও সে সম্মানিত ঘরে হাজিরা দেওয়ার তৌফিক দান করুন মসজিদ নির্মানের কাজে মুক্ত হস্তে দান করার তৌফিক দান করুন আমিন

আমাদের ইউটিউব চ্যানেল https://www.youtube.com/@Allahwalamedia https://www.youtube.com/@Allbangladua https://www.youtube.com/@Jaalhaq আমাদের ফেসবুক পেজ

আমাদের ফেসবুক গ্রুপ

ইনস্টাগ্রাম https://www.instagram.com/jaalhaq.bd/ আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করতে পারেন

 

 

কোন মন্তব্য নেই

ULTRA_GENERIC থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.