Header Ads

Header ADS

নতুন বছরে আল্লাহকে কিভাবে রাজি করব । সাহাবী বিদ্বেষী শিয়া ফিতনার অপনোদন। কারবালার শিক্ষা

 

বিছমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

মুহররম-, ১৪৪৫ হিজরী

নতুন বছরে আল্লাহকে কিভাবে রাজি করব

সাহাবী বিদ্বেষী শিয়া ফিতনার অপনোদন



﴿رَبَّنَا ٱغۡفِرۡ لَنَا وَلِإِخۡوَٰنِنَا ٱلَّذِينَ سَبَقُونَا بِٱلۡإِيمَٰنِ وَلَا تَجۡعَلۡ فِي قُلُوبِنَا غِلّٗا لِّلَّذِينَ ءَامَنُواْ رَبَّنَآ إِنَّكَ رَءُوفٞ رَّحِيمٌ ١٠﴾ [الحشر: ١٠]

হে আমাদের রব! আমাদেরকে ও ঈমানে অগ্রণী আমাদের ভাইদেরকে ক্ষমা করুন এবং যারা ঈমান এনেছিল তাদের বিরুদ্ধে আমাদের অন্তরে বিদ্বেষ রাখবেন না। হে আমাদের রব! নিশ্চয় আপনি দয়ার্দ্র, পরম দয়ালু।” [সূরা আল-হাশরআয়াত: ১০ 

ভুমিকা: আমাদের জীবন থেকে আরো একটি বছর অতিবাহিত হয়ে গেল, যারা নেক আমলের মাধ্যমে এই বছর কাটিয়েছেন তারা সৌভাগ্যবান, আর যারা অবহেলা করে গুনাহ করে করে, বেহুদা কাজ করে করে বিগত বছর পার করেছেন তারা হতভাগা আজ আমরা জানার চেষ্টা করব এই নতুন বছরটিকে কিভাবে আমরা যথাযথ কাজে লাগিয়ে সময়ের সৎ ব্যবহার করে গুনাহ থেকে বেঁচে থেকে আল্লাহকে রাজি করতে পারি

আমাদের আল্লাহ বড়ই রহিম করিম , মহান আল্লাহকে রাজি করার চেষ্টা করাই প্রত্যেক বান্দার ফরয এবং আল্লাহকে রাজি করা খুবই সহজ

আমরা ছোট বেলায় পড়েছি (এইম অব লাইফ) জিবনের উদ্দেশ্য, আমরা যারা মুসলমান আমাদের বছরের শুরুতে নিজেদের জীবনের উদ্দেশ্য ঠিক করতে হবে আর তা হল আল্লাহকে রাজি করা। আল্লাহকে খুশি করা। কিভাবে আল্লাহকে খুশি করা সম্ভব তা আজ শিখব ইনশা আল্লাহ।

সাহাবায়ে কেরাম আল্লাহকে রাজি করেছেন- তাই সাহাবায়ে কেরামের নামের শেষে আমরা (রাদিআল্লাহু আনহু ) বলি। কিন্তু কিছু কিছু হতভাগা সাহাবীদেরকে গালি দেয় তাদের ব্যপারে আমাদের করনীয় কি তাও আজ জানব। 

) আল্লাহকে রাজি করতে কত সময় লাগে?

আমরা যারা বিগত জীবনে বিগত বছরে আল্লাহর নাফরমানি করেছি, আমরা যদি সেকেন্ডের একটি আমল করি তাহলে আল্লাহ আমাদের নাফরমানি মাফ করে আমাদের উপর রাজি হয়ে যাবেন

মুসা () এর যুগে অনাবৃষ্টি এক ব্যক্তির তওবার ঘটনা:

মুসা () এর যুগে অনাবৃষ্টি দেখা দিল, যখন মুসা () বৃষ্টির জন্য দোয়া করতে লাগলেন বৃষ্টি হচ্ছিলনা, তখন আল্লাহ মুসাকে বললেন মুসা তুমি যাদের নিয়ে দোয়া করছ তার মধ্যে একজন আমার নাফরমান বান্দা আছে যে ৪০ বছর যাবত আমার নাফরমানি করেছে, তার কারনে আমি তোমার দোয়া কবুল করতে পারছিনা, তুমি তাকে বের করে দাও তারপর দোয়া করলে আমি দোয়া কবুল করব মুসা () বললেন এই মজলিশে যে ল্লাহর ৪০ বছর যাবত নাফরমানি করছ সে বের হয়ে যাও, এতগুলি মানুষের সামনে সে লোকটি বের হলে সকলে তাকে নাফরমান হিসেবে চিনে ফেলবে, সে লোক লজ্জার ভয়ে সে নাফরমান আল্লাহর কাছে মনে মনে তওবা করে দোয়া কলে ওহে খোদা আমি গুনাহগার তুমি গফুরুর রহিম, তুমি আমার তওবাকে কবুল করে নাও আমি আর কোনদিন তোমার নাফরমানি করব না বলে ওয়াদা করছি, তুমি আমাকে এতগুলি মানুষের সামনে বেইজ্জতি করিওনা, আল্লাহ তার সে মনের তওবা কবুল করে নিলেন আর সাথে সাথে বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল, এখন মুসা আল্লাহকে প্রশ্ন করেন হে আল্লাহ আমি তোমার নাফরমান বান্দাকে এই মজলিশ থেকে বের হতে বলেছি সে এখনো বেরহয়নি তার আগেই তুমি বৃষ্টি দিয়ে দিলে কেন? আল্লাহ বলে সে আমার নাফরমান নাই সে মনে মনে তওবা করেছে আর আমি তার তওবা কবুল করেছি ফলে তার কারনে আমি এখন বৃষ্টি নাজিল করেছি মুসা কথা শুনে হয়রান মুসা বলেন হে আল্লাহ সে কে? আল্লাহবলেন মুসা যখন সে নাফরমান ছিল তখন তার পর্দা আমি উম্মোচন করিনি এখন তওবা করেছে এখন কিভাবে তার পর্দা ফাস করব? এমনই মহান দয়ালু আমাদের রব যাকে রাজি করতে সেকেন্ডওলাগে না  যে মা সন্তানের প্রতি এত দরদি সে মা যদি কোন কারনে নারাজ হয় তাকে রাজি করতে কত কষ্ট হয় চেষ্টা করে দেখুন, কিন্তু আমার রব সে মা থেকে ৭০ গুন বেশী দয়ালু তাই তিনি বান্দা তওবা করার সাথে সাথে এত খুশি হন তার উসিলায় আল্লাহ তায়ালা রহমত নাজিল করেন দুনিয়াবাসীর সকল অভাব দুর করে দেন

আল্লাহ আমাদেরকে নতুন বছর তওবার মাধ্যমে আল্লাহকে রাজি করে শুরু করার তৌফিক দান করুন

) আল্লাহ আপনার উপর রাজি নাকি নারাজ কিভাবে বুঝবেন?

আপনি নিজেকে নিজে প্রশ্ন করে বুঝতে পারবেন আল্লাহ আপনার উপর রাজি নাকি নারাজ? আপনার ফজর কেটে গেছে ঘুমে, যুহর কেটে গেছে ব্যস্থতায়, আসর কেটে গেছে বাজারে, মাগরিব কেটে গেছে গল্প গুজবে, এশার কেটে গেছে নাটক দেখে, এভাবে পরের দিনও আপনার নসিব হয়নি আল্লাহর সামনে সিজদা দেওয়ার

একটি কথা মনে রাখবেন আল্লাহ যখন কারো উপর নারাজ হন তখন তার রিজিক বন্ধ করে দেন না বরং আল্লাহ যখন কারো উপর নারাজ হয়ে যান তখন তার কাছ থেকে সিজদার তৌফিক ছিনিয়ে নেন

তাই আল্লাহ কাছে নতুন বছরে ওয়াক্ত নামাজের তৌফিক চান, আর নামাজকে জীবনের রুটিনে অন্তর্ভূক্ত করে ফেলুন  আজ থেকেই নিয়ত করে নিন

এই নামাজের মাধ্যমে মুলত বান্দা আল্লাহর সাথে কথোপথন করে যেমন বুখারীর ৩৯৬ নং হাদিস

"‏ إِنَّ أَحَدَكُمْ إِذَا قَامَ فِي صَلاَتِهِ، فَإِنَّهُ يُنَاجِي رَبَّهُ ـ

 তোমাদের কেউ যখন সালাতে দাঁড়ায় তখন সে তাঁর রবের সাথে একান্তে কথা বলে।

৩) আল্লাহকে রাজি করার জন্য সবচেয়ে প্রিয় জিনিষ আল্লাহর জন্য কুরবান করতে হবে

এক পীর মুরিদ ভিখারির ঘটনা: এক লোক একজন পীর সাহেবের কাছে মুরিদ হলেন, পীর সাহেব মুরিদকে নসিহত করলেন, কখনো নিজেকে আল্লাহর চেয়ে বড় ভাববেনা, নিজেকে আল্লাহর উপর প্রাধান্য দিবেনা মুরিদ মনে মনে চিন্তা করল পীর সাহেব এর এটা কেমনতর কথা? মানুষ কি কখনো নিজেকে আল্লাহর চেয়ে বড় ভাবে? মানুষ কি কখনো নিজেকে আল্লাহর উপর প্রাধান্য দেয়? মুরিদ মনে মনে পীর সাহেবকে হালকা ভাবতে লাগল শেষে যখন মুরিদকে পীর সাহেবের মেহমান খানায় খানা খেতে দিল, নানা পদের খাবার সাজানো হলো, মুরিদ খেতে বসলেন, এমন সময় একজন ভিখারি হাক দিলেন আমাকে আল্লাহর ওয়াস্তে কিছু দিন তখন সে মুরিদ সে সব খাবার সমুহ থেকে ভালো ভালোগুলি নিজের জন্য রেখে যে খাবার তেমন ভালো না তা ভিখারির জন্য নিয়ে দরজার দিকে যেতে লাগলেন, এমন সময় পীর সাহেব আসলেন, আর মুরিদকে বললেন তুমি ভিখারিকে কি দিচ্ছ? তুমি কি আমার নসিহত ভুলে গেলে? আমি বলেছি নিজেকে আল্লাহর উপর প্রাধান্য দিবেনা, তুমি এই ভিখারির হাক শুননি সে বলেছিল আমাকে আল্লাহর ওয়াস্তে কিছু দাও, এখন তুমি মুলত নিজের জন্য ভালো ভালো খাবার রেখে যা নিন্মমানের খাবার তা আল্লাহর জন্য দিচ্ছ এভাবেই মুলত তুমি আল্লাহর উপর নিজেকে প্রাধান্য দিচ্ছ কথা শুনে সে মুরিদ নিজের ভুল বুঝতে পারলেন

আমাদেরও উচিত আল্লাহর জন্য যখন খরচ করব সেটা যেন ভালোটা ইমাম হোসেন কারবালায় সে উদাহারনই পেশ করেছেন

হযরত ইমাম হোসেন আল্লাহর জন্য কি দিয়েছেন?

(আলী আকবর, কাসেম, গাজি আব্বাস বনাম জয়নুল আবেদীন)

ইমাম হোসেন এর তাঁবুতে আলী আকবর সুস্থ ছিল তাকে আল্লাহর রাস্তায় কোরবান করে দিলেন হযরত কাসেম সুস্থ সবল ছিল তাকে আল্লাহর রাস্তায় কোরবান করে দিলেন হযরত গাজি আব্বাস সুস্থ সবল ছিল তাকে আল্লাহর রাস্তায় কোরবান করে দিলেন এভাবে ইমাম হোসেন একে একে সকল সুস্থ সবল আপনজনদেরকে আল্লাহর রাস্তায় কোরবান করে দিলেন আর যিনি অসুস্থ অচল হযরত জয়নুল আবেদীন তাকে নিজের জন্য রেখে দিলেনইমাম হোসেন যদি এজিদের প্রস্তাব মেনে নিতেন তাহলে আরাম আয়েশের জিন্দেগী লাভ করতে পারতেন, কিন্তু আল্লাহর সন্তুষ্টির খাতিরে তিনি নিজের জান মাল আল্লাহর রাস্তায় কোরবান করতে দ্বিধাবোধ করেননি তাই আজ ১৪০০ বছর হয়ে গেছে আজো মানুষ সে কোরবানিকে স্মরণ করেন অথচ এর চেয়েও বড় বড় হত্যা কান্ড দুনিয়ার বুকে হয়েছে লোমহর্ষক হত্যাকান্ড হয়েছে তা কেহ মনেও রাখেনি স্মরণও করেনা যে বাগদাদে ইমাম হোসেন শহিদ হয়েছেন সে কথা আজো সারা বিশ্বে স্মরণ হয়, এর চেয়েও বড় হত্যাকান্ড করেছে মোঙ্গল নেতা হালাকু খান সে প্রায় ১০ লাখ মুসলমানকে হত্যা করেছে দাজলা নদীর পানি মুসলমানদের রক্তে লাল হয়ে গেছে, কিন্তু এমন হত্যাকান্ড আজ মুসলমানরা স্মরণ করেনা, কারন ইমাম হোসেন এর শাহাদাত ছিল আলআহর সন্তুষ্টির জন্য

কিন্তু আমাদের অভ্যাস কি?

যারা আল্লাহকে রাজি করতে চান তারা সব কিছুতে আল্লাহর সন্তুষ্টিকে প্রাধান্য দিয়ে থাকেন, কিন্তু আমরা সবকিছুকে নিজের নফসকে প্রাধান্য দিয়ে থাকি আমরা যখন ভিখারিকে কিছু দিই যা অচল তা দিই, আল্লাহর ওয়াস্তে আমরা বাশি খাবার দিই, আল্লাহর ওয়াস্তে আমরা পুরানা কাপড় দিই, আল্লাহর জন্য আমরা ফাটা জুতা দিই, আল্লাহর ওয়াস্তে আমরা যখন ভিখারিকে টাকা দিই যে নোট অচল সেটা দিই, আমরা যখন মসজিদে টাকা দিই যে নোট পুরাতন সেটা দিই সে জন্য আমরা আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত

সাহাবীরা আল্লাহকে রাজি করার জন্য নিজের প্রাণ দিতেও দ্বিধা করত না

(রোম সৈন্যদের হাতে আবদুল্লাহ বিন হুজাইফার বন্ধি হওয়ার ঘটনা)

রোম সৈন্যদের হাতে হযরত আবদুল্লাহ বিন হুজাইফা সহ কিছু মুসলমান সৈন্য বন্ধি হন, রোম সম্রাট নানান ভাবে প্রলোভন দেখিয়ে আবদুল্লাহ বিন হুজায়ফাকে খ্রিষ্টান বানানোর চেষ্টা করেন, সবশেষে আরেক পরীক্ষার আয়োজন করলেন, এক বিশাল ডেকচিতে তেল গরম করে তাতে বন্দী একজনকে ফেলে হুজাইফা রা:কে ভয় দেখাতে চাইলেন। সাথে সাথে সেই ব্যক্তির হাড়সহ গলে বেরিয়ে এলো। নিজের চোখে সব অবলোকন করানোর পরে আবার সম্রাট প্রস্তাব পেশ করেন। আবার দৃঢ়তার সাথে প্রত্যাখ্যান করলে সম্রাট রেগে গিয়ে তাকে ডেকচিতে নিক্ষেপ করার নির্দেশ দিলেন।

জল্লাদ যখন তাকে নিয়ে যাচ্ছিল তখন হুজাইফা রা:-এর চোখ বেয়ে অশ্রু নির্গত হলো। সম্রাটকে সবাই বলতে লাগল, তিনি মৃত্যুভয়ে কাঁদছেন। সেই মোক্ষম মুহূর্তে সম্রাট আবার প্রস্তাব করলে হুজাইফা রা: ফিরিয়ে দিলেন। এরপর সম্রাট বললেন, ‘ধিক্কার তোমার প্রতি, তুমি যদি মৃত্যুভয় না পাও তবে কাঁদলে কেন?’
হুজাইফা রা: বলেন, ‘দেখুন আমি মৃত্যুর ভয়ে চোখের পানি ফেলিনি, বরং এই একটি মাত্র ডেকচির ফুটন্ত তেলের মাঝে আমাকে নিক্ষেপ করতে চাচ্ছেন, অথচ আমি আশা করেছিলাম যে, আমার শরীরের যতগুলো লোমকূপ রয়েছে ততগুলি প্রাণ হত আমি ততবার আমার আল্লাহর জন্য নিজের প্রাণ কোরবান করতে পারতাম। এখন আমি এই মর্যাদা লাভে ব্যর্থ হতে যাচ্ছি মনে করেই আমি চোখের পানি ফেলেছি।

হযরত আবদুল্লাহ বিন হুযাইফার আচরণে সম্রাট আশ্চর্য হলেন। একজন সামান্য যুদ্ধবন্দীর এমন অসীম সাহস কিভাবে হতে পারে? সম্রাট সর্বশেষ প্রস্তাব দিলেন, ‘তুমি যেহেতু আমার কোনো কথাই রাখলে না, তাহলে তুমি আমাকে আরবীয় প্রথা অনুযায়ী আমার সম্মানার্থে মাথায় একটি চুম্বন দাও, তাহলে তোমাকে মুক্তি প্রদান করব।
বিচক্ষণ হযরত আবদুল্লাহ বিন হুযাইফা রা: সম্রাটের প্রস্তাবে শর্ত জুড়ে দিলেন। তিনি বললেন, ‘যদি এর বিনিময়ে সম্রাট সকল যুদ্ধ বন্দীকে মুক্ত করে দেন তবেই তিনি সম্রাটের কপালে চুম্বন দেবার প্রস্তাব বিবেচনা করবেন।
রোমান সম্রাট তাঁর মর্যাদার কথা বিবেচনা করে আবদুল্লাহ ইবনে হুযাইফার প্রস্তাব গ্রহণ করলেন।
ইবনে হুযাইফা সকল যুদ্ধবন্দীকে মুক্ত করে খলিফা হযরত উমরের দরবারে এসে পৌঁছলেন। লোমহর্ষক এ ঘটনাটি তিনি সবাইকে শোনালেন। খলিফা তাঁর ঈমানী মনোবল, সাহসিকতা এবং বিচক্ষণতায় সদ্যমুক্ত সৈন্যদের উদ্দেশ্যে বললেন, ‘প্রত্যেকেরই উচিত হযরত আবদুল্লাহ বিন হুযাইফা আস সাহমীর মাথায় চুম্বন করা এবং সর্বপ্রথম তাঁর মাথায় চুম্বন আমিই দিয়ে শুরু করছি..

যারা আল্লাহর জন্য কোরবান করে আল্লাহ তাদেরকে এভাবেই সম্মানিত করেন।

ওমর বিন আবদু”ল আজিজ এর কবরে জাহান্নাম থেকে মুক্তির পরোয়ানা

হযরত ওমর বিন আবদুল আজিজ একজন ন্যায়পরায়ন বাদশা ছিলেন, তিনি খলিফার দায়িত্ব গ্রহণের আগে সম্পদশালী ছিলেন, কিন্তু খলিফা হওয়ার এক সময় নিজের পুত্র কন্যাকে ঈদে কাপড় কিনে দিতে পারেননা। তিনি ছিলেন ৩ মহাদেশের বাদশা। তার সময় এই ৩ মহাদেশে মানুষ এতই স্বচ্ছল ছিল জাকাত নেয়ার মত লোক খুজে পাওয়া যেত না। সরকারী কোষাগার ধন সম্পদে পরিপূণ ছিল, কিন্তু ওমর বিন আবদুল আজিজ মানুষের হক তোছরুফ করেন নি। তিনি বলতেন আমি মানুষের হক খেয়ে জাহান্নামে জ্বলতে পারবনা। আমি মানুষর হক তোছরুফ করে আমার আল্লাহকে নারাজ করতে পারবনা। তাই মৃত্যুর কয়েকদিন আগে উনার শালা উনাকে দেখতে এসে দেখেন গায়ের কাপড় ময়লা, বোনকে বলেন পরিস্কার কাপড় দিতে বদলানোর জন্য কিন্তু বোন ভাইকে বলেন উনার কাছে আছে কাপড় একটি আরেকটি কোথা থেকে দিব? এই কথা বলে ওমরের স্ত্রী কেঁদে দিলেন। সে ওমর বিন আবদুল আজিজ যখন ইন্তেকাল করলেন উনাকে যখন কবরে রাখা হচ্ছিল তখন একটি কাগজ উপড় থেকে উড়ে উড়ে কবরের মধ্যে গিয়ে পরল সে কাগজের এক পাশে লিখা বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম অপর পাশে লিখা  (বারায়াতুন মিনাল্লাহি লি উমর ইবনি আবদুল আজিজে মিনান নার) এটা ওমরের জন্য জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তির পরোয়ানা।

মৃত্যুর পর কবরে চেহেরা দেখে বুঝা যায় আল্লাহ রাজি কিনা?

ওমর বিন আবদুল আজিজ বলেন আমার কবরে রাখার পর আমার চেহেরা খুলে দেখবে আমার চেহেরা যদি কালো হয়ে যায়, আমার চেহেরা যদি কেবলা থেকে ফিরে যায় তাহলে বুঝে নিবে আমার আল্লাহ আমার উপর নারাজ। উনার অসিয়ত মোতাবেক দেখা হল আল্লাহর ফযলে উনার চেহেরা থেকে নুর চমকাচ্ছিল, আর চেহেরা কেবলার দিকে ঘুরানো ছিল। আলহামদুল্লিাহ

হযরত ওমর বিন আবদুল আজিজ সুযোগ থাকা সত্বেও মানুষের হক মারেন নি, জাহান্নামের আগুনকে ভয় করেছেন, আল্লাহর সন্তুষ্টিকে নিজের আরোম আয়েশের চেয়ে প্রাধান্য দিয়েছেন তাই মৃত্যুর সাথে সাথে দুনিয়াবাসী দেখতে পেয়েছেন তার জন্য জাহান্নাম থেকে মুক্তির পরোয়ানা। সুবহানাল্লাহ।

আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকেও মৃত্যু আগে আগে আল্লাহকে রাজি করার তৌফিক দান করুন, যাতে মৃত্যুর পর কবরে আমার চেহেরা কেবলা থেকে ফিরে না যায়, যাতে  মৃত্যুর পর আমাদের চেহেরা কালো হয়ে না যায়।

ইবনে রজব হাম্বলি তার কিতাব আল খুশু ফিস সালাহতে লিখেন- বিখ্যাত তাবেঈ আতা ইবনু আবি রাবাহ বলেন আমি যখন কোন কিছু দেখতে চাই তখন আমি ভাবি কয়েক সেকেন্ড আমি কল্পনা করি আমার এই দেখাতে আমার রব রাজি কিনা? তিনি বলেন আমি যখন কোন কিছু ধরতে চাই আমি ভাবি আমার রব এতে রাজি কিনা? আমি যখন কোন কিছু শুনতে চাই তখন আমি ভাবি আমার রব এতে রাজি কিনা? আমি যখন চলি আমি ভাবি আমার রব এতে রাজি কিনা?  আমাদের উচিত প্রত্যেক কাজে আল্লাহর সন্তুষ্টিকে প্রাধান্য দেয়া।

# যত আমল করব সব কিছুতে আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা করব

# নামাজ, রোজা, হজ, যাকাত, দান সদকা, এসব ইবাদত একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য করব

# দুনিয়াবি কাজেও আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা করব।  আল্লাহ আমাদেরকে তৌফিক দান করুন আমিন।

কোন আমলে আল্লাহ সবচেয়ে বেশী খুশি হন?

মুলত সব নেক আমলই আল্লাহর কাছে প্রিয় তবে তার মধ্যে বেশী প্রিয় আমল কোনটি তা নবী করিম () একটি ঘটনা দিয়ে আমাদেরকে বুঝিয়েছেন

১) তাওবা করলে বেশী খুশি হন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মনে কর কোন এক ব্যাক্তি (সফরের অবস্থায় বিশ্রামের জন্য) কোন এক স্থানে অবতরণ করলো, সেখানে প্রানেরও ভয় ছিল। তার সাথে তার সফরের বাহন ছিল। যার উপর তার খাদ্য ও পানীয় ছিল, সে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়লো এবং জেগে দেখলো তার বাহন চলে গেছে। তখন সে গরমে ও পিপাসায় কাতর হয়ে পড়লো।

রাবী বলেনঃ আল্লাহ যা চাইলেন তা হল। তখন সে বললো যে, আমি যে জায়গায় ছিলাম সেখানেই ফিরে যাই। এরপর সে নিজ স্থানে ফিরে এসে আবার ঘুমিয়ে পড়লো। তারপর জেগে দেখলো যে তার বাহনটি তার পাশে দাঁড়িয়ে আছে। তখন সে ব্যাক্তি যে পরিমাণ খুশী হলো। নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা তার বান্দার তাওবা করার কারণে এর চাইতেও অনেক বেশী খুশী হন। (বুখারী ৬৩০৮)

) মেহমানের ত্যাগ স্বীকার করলে আল্লাহ বেশী খুশি হন: বুখারীর ২০৫৪ নং হাদিস

আবূ হুরাইরাহ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক লোক রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বলল, আমি চরম অনাহারে ভুগছি। তিনি তার কোন এক সহধর্মিণীর নিকট লোক প্রেরণ করলে তিনি বললেন, যে স্রষ্টা আপনাকে সঠিক দীনসহ পাঠিয়েছেন তার কসম! আমার নিকট পানি ব্যতীত আর কিছু নেই। তিনি অপর এক স্ত্রীর নিকট লোক প্রেরণ করলে তিনিও অনুরূপ কথা বললেন। এভাবে তারা সবাই একই কথা বললেন যে, সে সত্তার কসম! যিনি আপনাকে সত্য দীনসহ প্রেরণ করেছেন, আমার কাছে পানি ব্যতীত আর কিছু নেই। তখন তিনি বললেন, আজ রাত্রে লোকটির কে অতিথিপরায়ণ হবেআল্লাহ তার উপর দয়া করুন! তখন এক আনুসারী লোক উঠে বলল, হে আল্লাহর রসূল! আমি।

অতঃপর লোকটিকে নিয়ে আনুসারী নিজ বাড়িতে গেলেন এবং তার সহধর্মিণীকে বললেন, তোমার নিকট কিছু আছে কি? সে বলল, না। তবে সন্তানদের জন্য অল্প কিছু খাবার আছে। তিনি বললেন, তুমি তাদের কিছু একটা দিয়ে ব্যস্ত রাখোআর যখন অতিথি ঘরে ঢুকবে, তখন তুমি আলোটা নিভিয়ে দেবে। আর তাকে বুঝাবো যে, আমরাও খাবার খাচ্ছি। সে (মেহমান) যখন খাওয়া আরম্ভ করবে তখন তুমি আলোর পাশে যেয়ে সেটা নিভিয়ে দেবে। রাবী বলেন, অতঃপর তারা বসে থাকলেন এবং অতিথি খেতে শুরু করলো। সকালে তিনি (আনসারী) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আসলে, তিনি বললেনঃ

عَجِبَ اللَّهُ مِنْ صَنِيعِكُمَا بِضَيْفِكُمَا اللَّيْلَةَ ‏"‏ ‏.‏

আজ রাত্রে অতিথির সঙ্গে তোমাদের উভয়ের ব্যবহারে আল্লাহ খুশী হয়েছেন

বড়পীর বলেনঃ আমি ধ্যান করে দেখতে পেলাম আল্লাহর কাছে ক্ষুধার্থকে খাদ্য খাওয়ানোর চাইতে প্রিয় কোন আমল নাই। সে জন্য যারা আল্লাহ ওয়ালা তারা মানুষকে জিন্দা থাকতেও খাওয়ান মৃত্যুর পরও তাদের মাজারে লঙ্গর খানা খোলা থাকে প্রতিদিন শত শত লোক সেখান থেকে খেতে পারেন। আমাদেরও উচিত যখনই সুযোগ হয় কোন ক্ষুধার্থকে খাবার খাওয়ানো, রাস্তা ঘাটে যদি দেখেন ভাই আমি ক্ষুধার্থ আমাকে ১০টা টাকা দেন, তখন আপনার যদি সময় হয় তাকে সাথে নিয়ে আশে পাশের হোটেলে গিয়ে কি খেতে চায় তা খাওয়ার অফার করবেন, তেমনি ঘরের দরজায় ক্ষুধাথ ভিক্ষুক এসে যদি কিছু চায় সুন্দর করে ঘরে বসিয়ে ঘরে যা যা আছে তা দিয়ে খাবার দিবেন। এটাই মানবতা এই আমলগুলিই আল্লাহ তায়ালা পছন্দ করেন।

সাহাবীদেরকে গালি দেয়া:

মুহররম মাসে শিয়ারা ইমাম হোসন (রা) এর প্রতি আলগা ভালোবাসা দেখায়, মাতম করে, তাজিয়া মিছিল করে, নিজেকে নিজে রক্তাক্ত করে এসব কিছু শরীয়ত বিরোধী কাজ। আল্লাহর অপছন্দনীয় কাজ। শিয়াদের সবচেয়ে বড় অপরাধ হল তারা সাহাবিদেরকে গালি দেয়। নাউজুবিল্লাহ

শিয়াদের ঈদ গদিরে খোমের ঘটনা:

শিয়ারা আমার আবু বকরকে গালি দেয়, ওমরকে গালি দেয়, ওসমান কে গালি দেয়, তারা নবীজির বিদায় হজ্জ শেষে মদিনায় ফিরার সময় মক্কা মদিনার মাঝামাঝি গদিরে খোম নামক স্থানে হযরত আলীকে নিয়ে নবীজির একটি কথার ভুল ব্যাখ্যা করে, সে দিন নবীজি বলেছিলেন 

مَنْ كُنْتُ مَوْلَاهُ فَعَلِيٌّ مَوْلَاه

অর্থাৎ, আমি যার মওলা, আলীও তার মওলা।

শিয়াদের দাবী আল্লাহর নবী এ কথা দ্বারা হযরত আলীকে নিজের খলিফা ঘোষনা করেছেন, অথচ এই কথাটার পিছনের কারন হল, হযরত আলী (রা) বিদায় হজে যোগ দেয়ার আগে এক জিহাদের সেনাপতি ছিলেন যুদ্ধে জয় করে গনিমতের মাল সহ ফিরে আসেন তিনি সহ অধিনায়ককে গনিমতের মালসমুহের মধ্যে বেশ কিছু জামা কাপড় ছিল তা মদিনায় নিয়ে গিয়ে নবীজিকে জমা দেয়ার নির্দেশ দেন, কিন্তু সহ অধিনায়ক কে যোদ্ধারা পিড়াপিড়ি করলে তিনি সে জামা কাপড়গুলি যোদ্ধাদেরকে দিয়ে দেন তারা তা গায়ে দিয়ে মক্কায় প্রবেশ পথে হযরত আলী যখন দেখেন সকলে গনিমতের মাল থেকে প্রাপ্ত জামা পরিধান করে আছেন তখন হযরত আলী (রা) তাদের সে কাপড় খুলে ফেলতে বললেন কিন্তু হযরত আলী (রা) এর এমন কঠোরতায় তারা সকলে মনক্ষুন্ন হল, হজ্ব শেষে যখন সকলে মদিনায় ফিরে যাচ্ছিল, তখন সকল সৈন্যরা হযরত আলীর বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ যখন নবীজিকে করলেন নবীজি খুবই বিরক্ত হলেন এবং সে সব যুদ্ধাদের এমন সমালোচনার মুখ বন্ধ করার জন্য নবীজি কঠোর ভাষায় সেখানে ভাষন দিলেন এবং বললেন

فَقَالَ مَنْ كُنْتُ مَوْلَاهُ فَعَلِيٌّ مَوْلَاهُ

অর্থাৎ, আমি যার মওলা, আলীও তার মওলা।

এখন এই কথাটাকে পুজি করে শিয়ারা দাবী করছে নবীজি আলীকে খলিফা বলে ঘোষনা দিয়েছেন সুতরাং নাউজুবিল্লাহ হযরত আবু বকর, ওমর, ওসমান এরা সকলেই অবৈধ খলিফা।

অথচ সাহাবিদের প্রসংশা স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা করেছেন- আল্লাহ তায়ালা বলেন


مُّحَمَّدٞ رَّسُولُ ٱللَّهِۚ وَٱلَّذِينَ مَعَهُۥٓ أَشِدَّآءُ عَلَى ٱلۡكُفَّارِ رُحَمَآءُ بَيۡنَهُمۡۖ تَرَىٰهُمۡ رُكَّعٗا سُجَّدٗا يَبۡتَغُونَ فَضۡلٗا مِّنَ ٱللَّهِ وَرِضۡوَٰنٗاۖ سِيمَاهُمۡ فِي وُجُوهِهِم مِّنۡ أَثَرِ ٱلسُّجُودِۚ

 

মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসূল। আর তার সহচরগণ কাফেরদের প্রতি কঠোর, তাদের পরস্পরের প্রতি সহানুভূতিশীল। আল্লাহর অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টি কামনায় আপনি তাদেরকে রুকুও সাজদায় অবনত দেখবেন। তাদের লক্ষণ তাদের মুখমণ্ডল সাজদাহর প্রভাবে পরিস্ফুট।

আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও তার সাহাবীগণের মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করে বলেছেন,

«لاَ تَسُبُّوا أَحَدًا مِنْ أَصْحَابِى، فَإِنَّ أَحَدَكُمْ لَوْ أَنْفَقَ مِثْلَ أُحُدٍ ذَهَبًا مَا أَدْرَكَ مُدَّ أَحَدِهِمْ وَلاَ نَصِيفَهُ».

তোমরা আমার সাহাবীগণের কাউকে গালি দিবে না; কারণ, তোমাদের কেউ যদি ওহুদ পাহাড়ের সমপরিমাণ স্বর্ণও দান করে, তবে সে তাদের এক মুদ বা তার অর্ধেক পরিমাণ দানের সাওয়াবও অর্জন করতে পারবে না। (বুখারী)

সুতরাং নিজেদের ঈমান ও আমলকে বাঁচাতে হলে আল্লাহর রেজামন্দি হাসিল করতে হলে আমাদেরকে সাহাবীদের সমালোচনা থেকে বেঁচে থাকতে হবে, কেহ সমালোচনা করলে তার সঙ্গ ত্যাগ করতে হবে।

নবীর পরিবার আহলে বায়তকে ভালবাসা যেমন আমাদের জন্য ফরয, তেমনি সাহাবায়ে কেরামগনকে তারকা সমতুল্য মান্য করাও আমাদের জন্য অত্যন্ত জরুরী। শিয়ারা আহলে বায়তের ভালবাসা দেখাতে গিয়ে সাহাবীদের গালি দেয়, আবার একদল সাহাবীদের পক্ষ নিয়ে আহলে বায়তকে সম্মান করা থেকে বিরত থাকে। আর আমরা আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত আহলে বায়তকে যেমন ভালোবাসি স্মরণ করি তেমনি সকল সাহাবায়ে কেরামকে সমালোচনার উর্ধে রেখে ভালোবাসি অনুসরন করি। 

﴿رَبَّنَا ٱغۡفِرۡ لَنَا وَلِإِخۡوَٰنِنَا ٱلَّذِينَ سَبَقُونَا بِٱلۡإِيمَٰنِ وَلَا تَجۡعَلۡ فِي قُلُوبِنَا غِلّٗا لِّلَّذِينَ ءَامَنُواْ رَبَّنَآ إِنَّكَ رَءُوفٞ رَّحِيمٌ ١٠﴾ [الحشر: ١٠]

হে আমাদের রব! আমাদেরকে ও ঈমানে অগ্রণী আমাদের ভাইদেরকে ক্ষমা করুন এবং যারা ঈমান এনেছিল তাদের বিরুদ্ধে আমাদের অন্তরে বিদ্বেষ রাখবেন না। হে আমাদের রব! নিশ্চয় আপনি দয়ার্দ্র, পরম দয়ালু। [সূরা আল-হাশর, আয়াত: ১০]


প্রশ্নোত্তর: এক মুসল্লী ভাই প্রশ্ন করেছেন দাঁড়ি কতটুকু রাখতে হবে?

জবাবঃ অধিকাংশ ফোকাহার মতে দাড়ি এক মুষ্ঠি রাখা ওয়াজিব নিজ হাতে এক মুষ্ঠি হওয়ার পর নিচে যেটুকু বের হয় সেটুকু কেটে ফেলা যাবে এখন কেহ যদি দাঁড়ি নিয়মিত চাছে কিংবা লাগাতার ছাটে এক মুষ্ঠি থেকে কম করে তাহলে তা গুনাহে কবিরা হবেতবে যদি কেহ দাড়ি না রাখে তাকে কাফের বলা যাবেনা, তার জন্য জান্নাত হারাম বলে ফতোয়া দেয়া যাবেনা তবে দাড়ি না রাখা কিংবা এক মুষ্ঠি থেকে ছেটে কম করে ফেলা গুনাহে কবিরা তবে যদি কেহ দাড়ি কাটাকে জায়েজ বলবে, হালাল বলবে সেটা কুফুরী হবে আর কেহ যদি হারাম মনে করেই না জায়েজ মনে করেই দাড়ি কাটে, ছেটে এক মুষ্ঠির কম করে ফেলে  তাহলে সে কাফের হবেনা এর বড় দলিল হল অত্যাহত্যা কবিরা গুনাহ আর এমন আত্যহত্যাকারীর জন্য নবী করিম () মাগফেরাতের দোয়া করেছেন আর দোয়া মাগফেরাত শুধুমাত্র মুসলমানের জন্য করা যায় কাফের এর জন্য দোয়ায়ে মাগফেরাত করা যায়না এর থেকে বুঝা যায় যদি কেহ কোন গুনাহে কবিরা হারাম মনে করে অনেক বড় গুনাহে কবিরা করে, তাহলে সে কাফের হয়ে যাবেনাসে মুসলমান থাকবে তেমনি ভাবে কেহ যদি হারাম মনে করেই দাড়ি কাটে সে যদিও কবিরা গুনাহ করছে কিন্তু তাকে কাফের বা জাহান্নামি বলা যাবেনা

আরব দেশে দাড়িঃ আরব দেশে অনেক ইমামের দাড়ি নাই, যারা আরব দেশে থাকেন তারা যে মসজিদের ইমামের দাড়ি আছে এমন মসজিদ তালাশ করবেন যদি না পান তাহলে দাড়ি ছাড়া ইমামের পিছে নামাজ আদায় করে নিবেন দাড়ি ইসলামের অনেক বড় শেয়ার, সমস্ত আম্বিয়াকেরামের সুন্নত হল এই দাড়ি এখন আরবের মধ্যে সাধারণ পাবলিক নয় বড় বড় ইমাম আলেমও দাড়ি কাটে এটা অনেক বড় বেদাত তাই আরবের যেগুলি ভালো দিক আমরা তা ফলো করব, আরবদের মধ্যে যদি কোন খারাপ দিক থাকে যেমন দাড়ি কাটা সেটা আমরা ফলো করা থেকে বিরত থাকব

কোন মন্তব্য নেই

ULTRA_GENERIC থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.