সুন্নতের গুরুত্ব। সুন্নতের উপর আমলের ফজিলত
সুন্নতের উপর আমল নাজাতের রাস্তা
মহান আল্লাহ বলেন, وَمَا آتَاكُمُ الرَّسُوْلُ فَخُذُوْهُ وَمَا نَهَاكُمْ عَنْهُ فَانْتَهُوْا ‘রাসূল তোমাদেরকে যা দেন, তা গ্রহণ কর এবং
যা হ’তে তোমাদের
নিষেধ করেন তা হ’তে বিরত থাকো’ (হাশর ৭)।
মানুষের ভুল ধারনা সে অনেক সম্মানি, কারন তাঁকে সবাই সম্মান করে, সালাম করে, ইজ্জত করে, ভোটে দাঁড়ালে ভোট দেয়, বিভিন্ন মাহফিলে অতিথি বানায়, তখন সে ভাবে ‘মনে হয় আমি সঠিক পথে আছি। আমি সুদের কারবার করি মনে হয় এই কারবার ঠিক আছে। আমি প্রচুর রুজি রোজগার করছি, আল্লাহ আমাকে অনেক ধন দৌলত দিয়ে মালামাল করে রেখেছেন মনে হয় আমি সঠিক পথে আছি।
এমন কিছু আত্মতুষ্টিতে আমরা অন্ধ হয়ে থাকি। আমরা জানি না আল্লাহ ধন দৌলত টাকা পয়সা ইজ্জত সম্মান কাফেরকেও দেন, তিনি ফেরাউন নমরুদকেও সম্মান দিয়েছেন রাজত্বি দিয়েছেন ধন সম্পদ দিয়েছেন, আল্লাহ কখনো সুর্যকে নিষেধ করেননি যে ফেরাউন নমরুদের ঘরে আলো দিও না। যে সুর্য আল্লাহর মাহবুবের ঘরে আলো দিয়েছে সে সুর্য আবু জেহেল আবু লাহাবের মত আল্লাহর দুষমনের ঘরেও কিরন দিয়েছে। তবে আল্লাহ যখন কারো উপর অসন্তুষ্ট হয়ে যান তখন তাঁর থেকে হেদায়েতের তৌফিক ছিনিয়ে নেন। সে মুরতাদ হয়ে যায়, নাস্তিক হয়ে যায়, বেদ্বীন হয়ে যায়, নবীর দুষমন হয়ে যায়, উগ্রতা গোঁড়ামি তাকে ঘিরে ধরে, হাজারো দলিল প্রমাণেও সে সত্য গ্রহণ করতে পারে না।
দাড়ি হারাম?
শিয়াদের মধ্যে এমন এক বাতিল দল রয়েছে যারা দাড়ি রাখাকে স্পষ্ট হারাম ফতোয়া দিয়েছে। দাড়ির ভিতর নাকি শয়তান বাস
করে। নাউজুবিল্লাহ। তাদের যুক্তি হল কাফির ইয়াজিদও দাড়ি রেখে নামাজ পড়ত।
তাঁদের এ কুযুক্তির জবাবে ওলামায়ে কেরাম বলেন: শিয়াদের এই যুক্তি হল মাথা ব্যাথা করলে মাথা কেটে ফেলে দিন। ইয়াজিদ দাড়ি রেখে ইমাম হোসাইন (রা) কে শহীদ করেছে ইবনে যিয়াদের মাধ্যমে তাই বলে দাড়ির কি সম্পর্ক? ইয়াজিদ নামাজও পড়েছে রোজাও রেখেছে কালিমাও পড়েছে তাই বলে কি এখন তাদের যুক্তিমত নামাজ, রোজা, কালেমা সব হারাম হয়ে গেছে? আস্তাগফিরুল্লাহ
।
তারা ইমাম হোসাইন
(রাঃ) কে অতি ভক্তি দেখাতে গিয়ে নবীর সুন্নতকে হারাম বলছে, অথচ তাঁরা এটা চিন্তা
করছে না ইমাম হোসাইন (রাঃ) এর ও দাড়ি ছিল।
আমাদেরকে জীবনটকে নবীর সুন্নত মত সাজাতে হবে নিজেকে এমন ভাবে গড়ে তুলতে হবে দুর থেকেও যদি কেহ দেখে যাতে বলে দিতে পারে ঐ দেখ মুহাম্মদে আরবীর গোলাম আসছে।
ইমামে জালালুদ্দীন সুয়ুতি (রহঃ) তাঁর লিখিত কিতাব বুশরাল কাতিব
বিলিকায়েল হাবিব এ একটি চমৎকার ঘটনা নকল করেন-
দাঁড়ির
কারনে কবর আযাব মাফ ঘটনা- এক লোককে কবরে রাখা হলে তার কবরে
মুনকার নকীর ফেরেশতা আগমন করল, তারা প্রশ্ন শুরু করল, সে লোকের কয়েকটি দাঁড়ি সাদা
ছিল তাতে মেহেদীর রং ছিল তখন এক ফেরেশতা
বলতে লাগল কার কাছে প্রশ্ন করছ তাঁর আকৃতিতে মুহাম্মদে আরবীর গোলামীর চিহ্ন
দেখতে পাচ্ছনা? সুতরাং আমাদেরকে আমাদের হুলিয়া এমন করে তৈরী করতে হবে যেন মানুষ
দুর থেকে দেখেই চিনতে পারেন যে ঐযে আসছে মুহাম্মদের গোলাম। ঐ যে আসছে মুসলমান। যার
হাত ও জবান থেকে অপর মুসলমান নিরাপদ।
ইমামের অজু
ছাড়া নামাজের বাস্তব ঘটনা- এক লোক মসজিদের ইমামতি করে আযানের
পর প্রায় ২৫ মিনিট পর জামাত শুরু হয় তাই তিনি মসজিদে এসে পিলার বা দেয়ালের সাথে
হেলান দিয়ে বসে থাকেন এভাবে হেলান দিয়ে বসলে যদি ঘুম এসে যায় তাহলে অজু ভঙ্গ হয়ে
যায়, সে ইমাম সাহেব একদিন এভাবে হেলান দিলে তাঁর ঘুম এসে গেল, মুয়াজ্জিন যখন আযান
দিল উনার ঘুম ভাঙ্গল, কিন্তু তিনি যেহেতু জামাতে লোক দাঁড়িয়ে গেলেন তাই অবহেলা করে
অজু ছাড়াই নামাজ পড়াতে দাঁড়িয়ে গেলেন, এভাবে তিনি প্রায় সময় ফজরে অজু ছাড়া নামাজ
পড়াতে আরম্ভ করলেন, বিশেষ করে শীতকালে এ ঘটনা তিনি বেশী করেন, আর চিন্তা করেন যদি
ইসলাম ধম সত্যি হত তাহলে আমার উপর আযাব গযব নাযিল হত, অথচ আমি স্বাভাবিক জীবন যাপন
করছি, আমার মাসে মাসে যে আয় রোজগার তাও বরাবর ঠিকঠাক আছে, কোন ধরনের সমস্যা হচ্ছে
না, তাই সে ইসলাম ধম ত্যাগ করে খ্রিষ্টান এনজিওদের মাধ্যমে খ্রিষ্টান হয়ে গেল, আর
এনজিওরা তাঁকে চাকরী দিল সে আগের চাইতে আরো ভাল আয় রোজগার করতে লাগল। এলাকার
কিছু আলেম সে ধর্মত্যাগীর সাথে সাক্ষাৎ করল এবং তাঁর ধর্মত্যাগের কারন জিজ্ঞাসা
করল সে সব খুলে বলল, সে বলল যদি ইসলাম ধর্ম সত্যি হত তাহলে আমি এত দিন অজু ছাড়া
নামাজ পড়িয়েছি আমার উপর কেন কোন আযাব আসল না? তখন ঐসব আলেমগণ থেকে একজন বিজ্ঞ আলেম
তাকে বলল আরে ভাই তুমি কিভাবে বুঝলে যে তোমার উপর আযাব আসেনি? এই যে আল্লাহ তায়ালা
তোমার কাছ থেকে ঈমান এর দৌলত ছিনিয়ে নিয়েছেন এর চেয়ে বড় আযাব আর কি হতে পারে?
সুতরাং
ঈমানের উপর থাকা, সত্য সঠিক পথে থাকা, হকের উপর থাকা মুলত আল্লাহর বড়ই রহমত। আর
নাস্তিক হয়ে যাওয়া, মুরতাদ হয়ে যাওয়া, নবীর শানে বেয়াদবী করা, নবীর শান ও মানের
বিরুদ্ধে কথা বলা, আল্লাহ প্রিয় বান্দাদের শানে বেয়াদবী করা এসব হল মুলত আল্লাহর
গযবে পতিত হওয়া। টাকা পয়সা প্রচুর কামাচ্ছেন, সম্মান পাচ্ছেন, ক্ষমতা পাচ্ছেন ভাল
কথা কিন্তু নিজের মুল বিষয় ঈমানটা যেন হেফাজতে থাকে সেটার দিকে আমাদের দৃষ্টিপাত
করতে হবে।
সব বেদআতই
গোমরাহি?
এখন আপনি
কোন ভাল কাজ ভাল আমল করতে গেলেই তাতে নানা ধরনের বাঁধা, বাঁধা কারা দেয় কোন হিন্দু
দেয় না, কোন খ্রিষ্টান দেয়না, কোন ইহুদী দেয়না, নেক ছুরতের কিছু লোকই বাঁধা দিবে,
বাঁধা দিতেনা পারলে ওয়াসওয়াসা হলেও দিবে। মনে সন্দেহ ঢুকিয়ে দিবে। আর তাঁদের
সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হয় একটি হাদিস- (কুল্লু বিদআতিন দালালাহ) প্রত্যেক বেদআতই
গোমরাহি।
এ হাদীসের
ব্যাখ্যা মেশকাত শরীফের শরাহ মেরকাতে বলা হয়েছে ﻛﻞ ﺑﺪﻋﺔ ﺿﻼﻟﻪ ﺍﻱ ﻛﻞ ﺑﺪﻋﺔ ﺳﻴﻯﺔ ﺿﻼﻟﺔ
অথ্যাৎ মন্দ
বেদআতই হল গোমরাহি। বেদআত সবগুলিই মন্দ নয়, যে বেদআত দ্বারা সুন্নতের ক্ষতি হয়, ইসলামের,
ঈমানের আকিদার ক্ষতি হয় সেগুলি গোমরাহি। বাকী
ভাল বেদআত সাহাবাগনও বাস্তবায়ন করেছেন- যেমন
(ক) হযরত আবু বকর ছিদ্দিক (রাঃ) কুরআনে
পাক জমা করার হকুম দিলেন
(খ) হযরত ওমর (রাঃ) এর তারাবী নামাজ
জামাতে পড়ার ব্যবস্থা এবং তিনি ঘোষনা দিলেন (নেমাতুল বেদআতে হাজিহি)
(গ) জুমার সময় ১ম আযান এর প্রচলন চালু করেন হযরত ওসমান (রাঃ)
এভাবে অসংখ্য
ভাল কাজ যুগে যুগে প্রচলন হয়েছে হচ্ছে যা দ্বীন ধমের জন্য ক্ষতিকর নয় বরং উপকারী তাই
হল বেদআতে হাসানাহ আর যা দ্বীন ধমের জন্য ক্ষতিকারক তাই হল বেদআতে সায়্যেআহ বা ক্ষতিকর
বেদআত। যে সব বেদআত অহরহ অসীম ছাওয়াবের নিয়তে
চলছে সেগুলির মধ্যে আরো আছে
যেমন
১, তারাবিহ ৩০ দিন জামআতে পড়া বিদআত,
২,কোরআন তেলাওয়াতের
পর সাদাকাল্লাহুল আজিম বলা বিদআত,
৩, সাহাবাগণের নামের
পর রদিয়াল্লাহু আন্হ বলা বিদআত,
৪, কারো নামের পর “রহঃ বলা, হাফিজাল্লাহ বলা ” বিদআত,
৫, কোরআনে হরকত বিদআত,
৬, মাদ্রাসার বার্ষিক
সভা, দস্তারবন্দী মাহফিল ইত্যাদি বিদআত,
৭. বড় বড় দালান তৈরী করে মাদরাসা করা
৮, টিভি চ্যানেল খুলে মোবাইলে, মিডিয়াতে দ্বীন প্রচার করা
বিদআত,
৯, সিরাতুন্নবী ﷺ মিলাদুন্নবী পালন বিদআত,
১০, ইমাম মুয়াজ্জিন আজান ইমামতির বিনীময়ে বেতন নেয়া
১১, বিভিন্ন হাদীসের কিতাব রচনা করা
১২. বুখারী খতমের আয়োজন করা
এগুলি সবই বেদআত কিন্তু এগুলি হল দ্বীনের জন্য উপকারী এসব দ্বারা দ্বীনের কোন ক্ষতি হয় না বরং এসবই এখন দ্বীন ধমের সহায়ক তাই এগুলি গোমরাহি নয়।
বিদআতে হাসানার হাদীসের দলিল
রাসূল ﷺ এরশাদ করেছেন….
ﻣَﻦْ ﺳَﻦَّ ﻓِﻲ ﺍﻹِﺳْﻼﻡِ ﺳُﻨَّﺔً ﺣَﺴَﻨَﺔً ﻓَﻠَﻪُ ﺃَﺟْﺮُﻫَﺎ
ﻭَﺃَﺟْﺮُ ﻣَﻦْ ﻋَﻤِﻞَ ﺑِﻬَﺎ ﺑَﻌْﺪَﻩُ ﻣِﻦْ ﻏَﻴْﺮِ ﺃَﻥْ ﻳَﻨْﻘُﺺَ ﻣِﻦْ
ﺃُﺟُﻮﺭِﻫِﻢْ ﺷَﻲْﺀٌ ﻭَﻣَﻦْ ﺳَﻦَّ ﻓِﻲ ﺍﻹِﺳْﻼﻡِ ﺳُﻨَّﺔً
ﺳَﻴِّﺌَﺔً ﻛَﺎﻥَ ﻋَﻠَﻴْﻪِ
ﻭِﺯْﺭُﻫَﺎ ﻭَﻭِﺯْﺭُ ﻣَﻦْ ﻋَﻤِﻞَ ﺑِﻬَﺎ ﻣِﻦْ ﺑَﻌْﺪِﻩِ ﻣِﻦْ ﻏَﻴْﺮِ
ﺃَﻥْﻳَﻨْﻘُﺺَ ﻣِﻦْ ﺃَﻭْﺯَﺍﺭِﻫِﻢْ ﺷَﻲْﺀ
অর্থঃ যে ব্যক্তি ইসলামে একটি নতুন ভাল প্রথা
আবিষ্কার করল তার জন্য উত্তম প্রতিদান রয়েছে, এবং যারা এর উপর আমল করবে তাদের জন্যও উত্তম প্রতিদান রয়েছে। এতে লোকেরা যে
অনুযায়ী আমল করেছে,তাকে সব আমলকারীর সমান সওয়াব
দেওয়া হবে।আবার তাদেরকে ও কম দেওয়া হবে না। আর যে ইসলামে একটি খারাপ প্রথা চালু
করেছে ও লোকেরা সে অনুযায়ী আমলকরেছে, তাকে সব আমলকারীর সমান পাপ দেওয়া হবে। আবার তাদের পাপে কম করা হবে না।
★সহীহ মুসলিম , ইবনু মাজাহ,১ম খন্ডঃ হাদিসঃ ১৭৩।(সহিহ)।
সুতরাং এদিক সেদিকের কথায় কান দেয়ার সময় এখন নাই সময় অতি অল্প এই অল্প সময়ে নিজের
গাট্টিকে নেকিতে ভতি করে নিতে হবে, নামাজ,
রোজা হজ্ব জাকাত, নফল এবাদত, তাহাজ্জদ, নেক আমল, দান সদকা,
নবীর সুন্নত, এসব দিয়ে জীবনকে সাজিয়ে ফেলতে হবে
সকল ভাল কাজে আন্তরিকতার সাথে যোগদান করতে হবে
মহান আল্লাহ বলেন, وَمَا آتَاكُمُ الرَّسُوْلُ فَخُذُوْهُ وَمَا نَهَاكُمْ عَنْهُ فَانْتَهُوْا ‘রাসূল তোমাদেরকে যা দেন, তা গ্রহণ কর এবং
যা হ’তে তোমাদের
নিষেধ করেন তা হ’তে বিরত থাকো’ (হাশর ৫৯/৭)।
মুত্তাফাক আলাই হাদীসঃ
হুযুর (দঃ) স্বর্ণ হারাম হওয়ার আগে নিজের জন্য স্বর্ণের আংটি বানাতে দিলেন, আবদুল্লাহ বিন ওমর
(রাঃ) এরশাদ করেন যখন হুযুর (দঃ) স্বর্ণের আংটি বানালেন সকল সাহাবাগনের মধ্যে তা প্রচার হয়ে গেল। তখন সকল সাহাবাগন হুযুরের সুন্নত পালনার্থে স্বর্ণের আংটি বানিয়ে নিল। হুযুর (দঃ) স্বর্ণের আংটিটি পরলেন না বরং ছুড়ে ফেলে দিলেন তখন সকল সাহাবা নিজ নিজ আংটি ছুড়ে ফেলে দিল,
কেহ স্বর্ণের আংটি ঘরে নিয়ে গেল না।
হুযুরের প্রতি সাহাবাগনের ভালবাসা এমনই ছিল।
মুসলিম শরীফের হাদীস নং ২০৯০: হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন- এক সাহাবী স্বর্ণের আংটি পরিধান করে আসল, হুযুর (দঃ) তাঁকে ডাকলেন তার হাত থেকে আংটিটি খুলে ছুড়ে মারলেন, হুযুর (দঃ) যখন হুজরায় তশরীফ নিয়ে গেলেন সে সাহাবীও চলে যেতে লাগল, তখন অন্য একজন বললেন হুযুর আংটি নারীদের জন্য হালাল রেখেছেন আপনি এটি উঠিয়ে নিন নিজের ঘরে কোন মহিলা থাকলে তাঁকে দিয়ে দিন, তখণ সে সাহাবী জবাব দিলেন (ওয়াল্লাহে লা আখুজুহু আবাদান) আল্লাহর কসম আমি কখনো সে আংটি উঠাবো না,
যে আংটিটি হুযুর (দঃ) ফেলে দিয়েছেন আমি কিভাবে তা তুলে নিয়ে ঘরে নিয়ে যাব?
ফতোয়া হল তা পুরুষের জন্য হারাম নারীর জন্য হালাল, কিন্তু সাহাবাগন সেখানে ফতোয়া দেখেনি বরং হুযুর যেটা ফেলে দিয়েছে সেটা ঘরের নারীর জন্য যদিও হালাল হয় সেটা এখন আমার তুলে নিয়ে যাওয়াটা হুযুরের প্রতি ভালবাসার বিপরীত দেখা যাচ্ছে। এমনই ছিল সাহাবাগনের ভালবাসা
সাহাবাগন আপাদমস্তক
হুযুরের অনুসরন করত আমাদেরকেও আপাদমস্তক হুযুরের অনুসরন করতে হবে তাহলেই আমাদের
ঈমানের নুর উজ্জ্বল হবে
হযরত মুসা
ও যাদুকরঃ আল্লাহ তায়ালা মুসা (আঃ) কে নিদেশ দিলেন ফেরাউনকে দ্বীনের
দাওয়াত দিতে, হযরত মুসা (আঃ) দ্বীনের দাওয়াত নিয়ে গেলেন ফেরাউন মুসা (আঃ) এর দ্বীন
কবুল করল না বরং ফেরাউনের নিযুক্ত যে সব যাদুকর ছিল তারাই মুসা (আঃ) এর ধর্মের
দ্বীক্ষা নিয়ে নিল, মুসা (আঃ) আল্লাহর কাছে আরজ করল হে আমার রব আপনি আমাকে বলেছেন
ফেরাউনকে দাওয়াত দিতে ফেরাউন আমার দাওয়াত কবুল করেনি তবে তার যাদুকরগন কবুল করে
নিল এর হেকমত কি? তখন আল্লাহ তায়ালা বললেন হে মুসা ফেরাউনের দরবারে সমস্ত যাদুকর
আজ তোমার মত পোষাক পরিধান করেছে তারা পোষাকের ক্ষেত্রে তোমার অনুসরন করেছে সেটা
আমার পছন্দ হয়েছে তাই আমি তাঁদেরকে হেদায়েতের নুর দান করে দিলাম।
সুতরাং
আমাদেরকেও সদা সর্বদা সারা রাত দিন ২৪ ঘন্টা সারা জীবন আপাদমস্তক নবীর সুন্নতের
উপর আমল করতে হবে।তাহলে আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে বেদ্বীন, নাস্তিক, মুরতাদ, নবীর
দুষমন, অলির দুষমন হওয়া থেকে রক্ষা করবেন এবং সরল সঠিক পথে পরিচালিত করবেন।
২৪ ঘন্টায়
নবীর সুন্নত হযর
১। ঘুমাতে গেলে অযু করা
২। ডান কাতে শোয়া
৩।ঘুমানোর আগে বিছানা ঝেড়ে নেয়া
৪।ঘুমানোর দোয়াসমুহ পড়া
৫। ঘুম থেকে উঠে মুখে হাত মাসেহ করা
৬। দোয়া পড়া
৭।মিসওয়াক করা
৮।বাথরুমে বাম পা দিয়ে দোয়া পড়ে প্রবেশ করা
৯। প্রত্যেক নামাজের অজুর আগে মিসওয়াক করা
তেমনি ভাবে অজুতে সুন্নত আছে, গোসলের সুন্নত আছে,
১০। কাপড় পরিধানের সুন্নত আছে, বিসমিল্লাহ বলা, পরার সময় ডান দিক থেকে খোলার সময় বাম দিক থেকে খোলা।
১১। জুতা পরিধানের সুন্নত আছে ডান দিক থেকে জুতা পরিধান করা, দাঁড়িয়ে জুতা পরিধান না করা,
১২। নিজের ঘরে প্রবেশের সুন্নত
১৩। অন্যের ঘরে প্রবেশের সুন্নত
১৪।মসজিদে প্রবেশের সুন্নত
১৫। আযানের সময় সুন্নত
১৬।নামাজের সুন্নত
১৭। মানুষের সাথে দেখা সাক্ষাতের সুন্নত
১৮।খাবারের, পানি পানের সুন্নত
১৯।কুরআন তেলাওয়াতের সুন্নত
এভাবে প্রতিটি ক্ষেত্রে নবীজির প্রিয় প্রিয় সুন্নত সমুহ আছে যা আমাদের জানতে হবে এবং সে মোতাবেক আমল পেয়ারা হওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে, নিজেও করতে হবে ঘরের অধীনস্তদেরও এতে অভ্যস্থ করে গড়ে তুলতে হবে। তাহলেই আমাদের জন্য দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ নিহীত রয়েছে
জীবনটা বরফের মত গলে গলে মানবজাতি ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে যাচ্ছে জীবনের বরফ গলে যাওয়ার আগে আগে আমাদেরকে কবরের জন্য তৈয়ারী করতে হবে
দৈ
বরফ ও ইন্নাল ইনসানা লাফি খুছরঃ এক আলেম বলেন আমি ইন্নাল
ইনসানা লাফি খুছরিন এর সঠিক অর্থ এক বরফ বিক্রেতার কাছে বুঝতে পেরেছি, আল্লাহ
তায়ালা সুরা আছরে বলে (ওয়াল আসরে শপথ যুগের, ইন্নাল ইনসানা লাফি খুছরিন নিশ্চয়ই
মানুষ ক্ষতিগ্রস্থতায় নিপতিত। ) আলেম বলেন আমি একদিন বাজারে যাচ্ছিলাম তখন এক বরফ
বিক্রেতা ডাক দিল ও ভায়েরা (ইরহামু ইরহামু আলা মা
এয়াজুকু রাছু মালি) আমার উপর দয়া কর আমার বরফ কিনে নিয়ে যাও, আমি এমন
ব্যবসায়ী যার মুলধন গলে গলে শেষ হয়ে যাচ্ছে।
কেননা বরফ
এমন এক বস্তু যা গ্রাহকের জন্য অপেক্ষা করে না গলতেই থাকে, আপনি কাপড় বিক্রী করলে
আজকে কাস্টমার না হলে আগামীকাল আসবে কিন্তু বরফ এমন নয়।
যখন এই বরফ
বিক্রেতা এই কথা বলল আমার মুলধন গলে গলে নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে, তখন আমি সেখানে থেমে
গেলাম, এবং সে বরফ বিক্রেতাকে বললাম ভাই আমি ইন্নাল ইনসানা লাফি খুছরিন এর তরজুমা
আজ বুঝে ফেলেছি। যেভাবে তোমার বরফ গলে গলে নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে, ঠিক তেমনিভাবে আমার
জীবনের হায়াতও নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে। তোমার বরফ ফোটা ফোটা নিঃশেষ হচ্ছে আর আমার
জিন্দেগী প্রতিটি শ্বাস প্রশ্বাসে নিঃশেষ হচ্ছে। তুমি যদি বরফ গলার আগে কারো কাছে
টাকা পয়সা, কিংবা কোন মুল্যবান জিনিষের বিনিময়ে বিক্রী করতে পার তা তোমার কাজে
আসবে। তেমনি মানুষ যদি তাঁদের এই শ্বাস যতক্ষন চালু আছে ততক্ষন রুকু করে, সিজদা
করে, নবীর সুন্নতের উপর আমল করে, নেক আমল করে তাহলে সেটাই মানুষের কাজে আসবে। হযরত
আলী (রাঃ) বলেন বান্দার এক একটি শ্বাস হল মৃত্যুর দিকে এক একটি কদম অগ্রসর হওয়া।
তাঁই মৃত্যুর দোড় গোড়ায় পৌঁছার আগেই আমাদেরকে এই জীন্দেগীকে এই শ্বাসকে কাজে
লাগাতে হবে।
বুযুর্গ
লোক আল্লাহর সাথে সন্ধী বাজারে ও কবরেঃ
এক লোক
বাজারে গিয়ে দেখে এক পাগল টাইপের বুযুগ বসে বসে কাঁদছে, লোকটি ঐ বুযুগকে প্রশ্ন
করল চাচা আপনি কাঁদছেন কেন? সে বলল আমি দেখছি এই বাজারের সকল দোকানদার এতই ব্যস্ত
আল্লাহকে ভুলে আছে, তাই তাঁদের কাছে গিয়ে আমি অনুরোধ করলাম যেন সময় থাকতে আল্লাহর
সাথে সন্ধি করে নেয়, আল্লাহ এখন তাঁদের সাথে সন্ধি করতে রাজি আছে কিন্তু কোন
দোকানদার রাজি হচ্ছে না, কয়েকদিন পর সে লোকটি দেখলে সে বুযুর্গ লোকটি এক কবরস্থানে
বসে বসে কাঁদছে, তখন লোকটি সে বুযুর্গকে প্রশ্ন করলেন চাচা আপনি আজ কবরস্থানে বসে
বসে কেন কাঁদছেন? তখন বুযুর্গ জবাব দিল সেদিন বাজারের লোকদের সাথে আল্লাহর সন্ধি
করাতে চেয়েছি সেদিন আল্লাহ সন্ধি করতে রাজি ছিল দুনিয়াদার দোকানদার রাজি ছিল না,
আজ এখানে এক দোকানদারকে কবর দেয়া হয়েছে আজ আমি চাচিছ কবরের দোকানদারের সাথে
আল্লাহর সন্ধি করাতে কিন্তু আজ দোকানদার
সন্ধি করতে রাজি হয়েছে কিন্তু আজ আল্লাহ রাজি হচ্ছে না।
সুতরাং
জিন্দেগী থাকতে থাকতে আল্লাহকে রাজি করে নিতে হবে। নাহয় যখন কবরে যাবেন তখন সে
সুযোগ আর বাকী থাকবে না।
সাহাবায়ে
কেরাম আল্লাহকে রাজি করেছেন তাঁদের জন্য আল্লাহকে রাজি করার সময়চেয়ে বড় মাধ্যম ছিল
হুযুরকে রাজি করা হুযুর রাজিতো আল্লাহ রাজি,
কোন মন্তব্য নেই